সারাদেশের সাথে পাল্লা দিয়ে চট্টগ্রামেও বাড়ছে ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে অধিকাংশই লিউকেমিয়া বা ব্লাড ক্যান্সারের রোগী। চট্টগ্রামে শিশু ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের সংকট ও চিকিৎসার অপ্রতুলতার কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীদের ঢাকার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।
চমেক হাসপাতালে গত বছর প্রায় দুইশ’র কাছাকাছি ক্যান্সারের আক্রান্ত নতুন শিশু চিকিৎসা নিয়েছে বলছেন চিকিৎসকরা। এমন অবস্থায় আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব শিশু ক্যান্সার দিবস। প্রতি বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিকভাবে এ দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। নানা আয়োজনে চট্টগ্রামেও দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের ক্যান্সার বড়দের মতো না। পেটের মধ্যে কোনো চাকা দেখা দিলে ও ব্যথা না থাকলেও বুঝতে হবে কিডনি বড় হয়ে গেছে। সেখান থেকে কিডনির ক্যান্সার হতে পারে। অথবা শরীরের যেকোনো জায়গায় টিউমারের মতো দেখা গেলে, কোনো আঘাত পায়নি অথচ একটা জায়গায় ফুলে গেছে, এটাও একটা ক্যান্সারের লক্ষণ। দাঁত ব্রাশ করতে গিয়ে দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ছে অথবা গায়ের চামড়া মধ্যে মশার কামড়ের মতো লাল লাল দাগ উঠেছে, অথবা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাচ্ছে, অথবা অনেক দিন জ্বর, কোনো ওষুধ খেয়েই জ্বর কমছে না, বাচ্চার ওজন কমে যাচ্ছে, বাচ্চার গায়ের রং ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে, এই ধরনের উপসর্গ ক্যান্সারের লক্ষণ। আবার ঘাড়ের দু’পাশের গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া ক্যান্সারের লক্ষণ। এরকম হলে অবশ্যই পরীক্ষা করতে হবে।
জানা গেছে, ক্যান্সার শিশুদের জন্য একটি নীরব ঘাতক হিসাবে চিহ্নিত। পৃথিবীতে ক্যান্সারে আক্রান্ত যত শিশু রয়েছে তার ৯০ ভাগই দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশে বসবাস করে। ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে মাত্র ১ জন উন্নত চিকিৎসা পায়। ক্যান্সার একটি দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা পদ্ধতি। এছাড়া খরচ অনেক বড় ব্যাপার। আর সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে ক্যান্সার রোগীদের গাদাগাদি করে না রেখে পৃথক শয্যায় রাখতে পারলে ভালো। কিন্তু হাসপাতালে ওই সুযোগ এখনো নেই। তবে চট্টগ্রামে নির্মাণাধীন পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার হাসপাতালে শিশুদের জন্য পৃথক ইউনিট থাকবে। সেখানে পর্যাপ্ত জনবল এবং সুযোগ–সুবিধা রাখা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগ ও হেমাটো–অনকোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এ কে এম রেজাউল করিম জানান, চট্টগ্রামে ব্লাড ক্যান্সারের রোগী আমরা বেশি পাচ্ছি। তবে দশ বছরের মধ্যে যদি এই ক্যান্সার হয় তাহলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। এরপর কিডনি, লিভারসহ বিভিন্ন ক্যান্সার পাওয়া যায়।