Google search engine
প্রচ্ছদসারাদেশস্ত্রী ও দুই ছেলেকে হারিয়ে ছোট মেয়েকে সান্ত্বনা দেওয়ার...

স্ত্রী ও দুই ছেলেকে হারিয়ে ছোট মেয়েকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খুঁজছেন শফি

তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে সুখের সংসার ছিল মো. শফির। ছোট ছেলের এসএসসি পরীক্ষা শেষ। তাই মায়ের সঙ্গে সিএনজিতে করে নানাবাড়িতে যাচ্ছিল দুই ভাই ও ছোট বোন। কিন্তু সে যাত্রাই তাদের শেষযাত্রা হবে, তা কে জানত!

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে আনোয়ারা যাওয়ার সময় উপজেলার ডাকপাড়া এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান মো. শফির স্ত্রী কোহিনূর আক্তার এবং তাঁর দুই ছেলে মো. ওহিদুল ইসলাম (১৯) ও মো. মিরাজ (১৬)। একটি বাসের ধাক্কায় তাঁদের বহনকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশাটিকে দুমড়েমুচড়ে দেয়। এ ঘটনায় আহত তাঁর ছোট মেয়ে সুমাইয়া (৯) চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্ত্রীসহ পরিবারের তিন সদস্যকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন মো. শফি।

২০০১ সালে আনোয়ারা উপজেলার কোহিনূর আকতারের সঙ্গে পটিয়া উপজেলার মো. শফির বিয়ে হয়। মাহিন্দ্রা গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন মো. শফি। তিনি বলেন, ‘বড় ছেলে ওহিদুল এ বছর স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছিল। সংসারের খরচ চালাতে টিউশনি করিয়ে আমাকে সাহায্য করত সে। দুই ছেলে নিয়ে আমার ও আমার স্ত্রীর অনেক স্বপ্ন ছিল। বাপের বাড়িতে গেলে ছেলেমেয়েরা কোথায় খাবে—এ চিন্তা করে সে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছিল। আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। ছোট মেয়েটা হাসপাতালে ভর্তি। তাকে কীভাবে সান্ত্বনা দেব?’

গতকাল দিবাগত রাত একটার সময় আনোয়ারা থানার মাঠে স্ত্রীর লাশ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন মো. শফি। আনোয়ারা থানার কাজ শেষ করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুই ছেলের লাশ নিতে যেতে হবে তাঁকে।

কোহিনূর আক্তারের বোন রাশেদা আকতার বলেন, ‘বোনের বড় ছেলে মারা যাওয়ার আগে আশপাশের লোকজনকে বাড়ির ফোন নম্বর দিয়ে যায়। খবর পেয়ে আমি ফোন করে শফিকে হাসপাতালে যেতে বলি। তিনি তখনো স্ত্রী–সন্তানদের মৃত্যুর খবর জানতেন না।’

আক্ষেপ করে মো. শফি বলেন, ‘২৯ বছর ধরে গাড়ি চালাচ্ছি আমি। কোনো দিন আমার হাতে একটা সাপও মরেনি। আর আজ সড়ক দুর্ঘটনায় আমার সাজানো বাগান ভেঙে তছনছ হয়ে গেল।’

spot_img
spot_img

এই বিভাগের আরও পড়ুন

চট্টগ্রাম

সারাদেশ

বিশেষ-সংবাদ

বিনোদন