পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে ইসলামাবাদের সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক এগিয়ে নিতে ১৯৭১ সালের অমীমাংসিত সমস্যাগুলো মীমাংসা করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) মিশরের রাজধানী কায়রোতে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে এক বৈঠকে ড. ইউনূসকে এ আমন্ত্রণ জানান তিনি। বৈঠকে ব্যবসা-বাণিজ্য, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছেন তারা।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করা হয়েছে এসব তথ্য।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুদেশের শীর্ষ দুই নেতৃত্ব চিনি শিল্প এবং ডেঙ্গু ব্যবস্থাপনার মতো নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়েও আলোচনা করেছেন। এছাড়া আঞ্চলিক সংস্থা সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করাসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা।
বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকার বর্তমানে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ব্যবস্থার যে প্রয়োজনীয় সংস্কার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সে ব্যাপারে কথা বলেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন।
এ সময় ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে ১৯৭১ সালের অমিমাংসিত ইস্যুগুলো নিষ্পত্তি করার আহ্বানও জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। শাহবাজ শরিফকে তিনি বলেছেন, ইস্যুগুলো বারবার উঠে আসছে। আসুন, আমরা সেই বিষয়গুলো সমাধান করে নিই, যাতে আমাদের সম্পর্ক সামনে এগিয়ে যেতে পারি।
জবাবে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ১৯৭৪ সালেই বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারত ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে বিষয়গুলো মীমাংসা হয়ে গেছে। তবে যদি আরও অমীমাংসিত ইস্যু থাকে, তাহলে সেগুলোতে খুশি মনেই মনোযোগ দেবেন তিনি। এরপর অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য চিরতরে বিষয়গুলোর সমাধান ভালো হবে।
বিবৃতি অনুযায়ী, ঢাকা ও ইসলামাবাদের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন শাহবাজ শরিফ। তিনি বলেছেন, আমরা সত্যিই আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক জোরদার করার অপেক্ষায় আছি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্র পরিচালিত চিনিকলগুলোকে আরও ভালোভাবে পরিচালনার জন্য প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের কারণে মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বলেন, এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তানের অভিজ্ঞতা থেকে উপকৃত হতে পারে ঢাকা।