২০২২ সালের পরের দুই বছরে ক্রমাগত উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দেশের মানুষের ক্রয় সক্ষমতা কমেছে, এতে নতুন করে ৭৮ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমায় এসেছে, আর প্রায় এক কোটি মানুষ দারিদ্র্যের ঝুঁকির মধ্যে এসেছে। এর মধ্যে আগে দরিদ্র ছিল, এমন মানুষের মধ্যে ৩৮ লাখ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে এসেছে। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে ১ কোটি ৭৮ লাখ মানুষ নতুন করে হয় দরিদ্র হয়েছে বা দারিদ্র্যের ঝুঁকির মধ্যে এসেছে- উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সেভাবে আয় না বাড়ার ব্যবধানের কারণে।
রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
গতকাল রোববার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের প্রস্তুতি’ শীর্ষক কর্মশালায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
র্যাপিড চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক গবেষণাটি উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
এম এ রাজ্জাক বলেন, দারিদ্র্য যে হারে বেড়েছে প্রকৃত মজুরি সে হারে বাড়েনি। ফলে দারিদ্র্য ও তার ঝুঁকি বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পলিসি, দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। অতিমাত্রায় মূল্যস্ফীতি বেড়েছে অতিরিক্ত টাকা (ছাপিয়ে) সরবরাহের কারণে।
র্যাপিডের পরিচালক ড. মোহাম্মদ দ্বীন ইসলাম বলেন, ‘ভোক্তার ক্রয় সক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে দারিদ্র্য ও তাতে পড়ার ঝুঁকি বেড়ে গেছে।’
এদিকে সম্প্রতি মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে অন্তত এক বছর সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, আসছে জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামবে। আর আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত নভেম্বর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১.১৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩.৮০ শতাংশ। গ্রামাঞ্চলে এর পরিমাণ ১৩.৪১ শতাংশ ও শহরে ১৪.৬৩ শতাংশ।