Google search engine
প্রচ্ছদআন্তর্জাতিকসিরিয়ায় ৪৮ ঘণ্টায় ইসরায়েলের ৪৮০টি হামলা, ধ্বংস লাতাকিয়া নৌবহর

সিরিয়ায় ৪৮ ঘণ্টায় ইসরায়েলের ৪৮০টি হামলা, ধ্বংস লাতাকিয়া নৌবহর

সিরিয়াজুড়ে দুই দিনে প্রায় ৪৮০টি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এসব হামলায় সিরিয়ার কৌশলগত অস্ত্র মজুদের অধিকাংশই ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ মঙ্গলবার বলেছেন, ইসরায়েলের লক্ষ্য সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে একটি ‘শত্রুমুক্ত প্রতিরক্ষা জোন’ বসানো যা স্থায়ী সেনা উপস্থিতি ছাড়াই বলবৎ থাকবে।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, সিরিয়ার ১৫টি নৌযান, বিমান–বিধ্বংসী ব্যাটারি, অস্ত্র উৎপাদন ক্ষেত্রসহ বিভিন্ন অবকাঠামোয় এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক বিবৃতিতে সিরিয়ার নৌবহরে হামলার খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদ সরকারের পতনের পর সিরিয়ার সামরিক সম্পদ ‘যুদ্ধের আওতার বাইরে রাখার’ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এসব হামলা চালিয়েছে, বলছে ইসরায়েল।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সিরিয়ার আল–বায়দা ও লাতাকিয়া বন্দরে গত সোমবার রাতে হামলা চালানো হয়। এখানেই ১৫টি জাহাজ নোঙর করা ছিল।

হামলার পরে ধারণ করা লাতাকিয়া বন্দরের একটি ভিডিও ফুটেজের সত্যতা যাচাই করেছে বিবিসি। ওই ভিডিওতে সারি সারি জাহাজ আর বন্দরের একাংশের ব্যাপক ক্ষতি হতে দেখা গেছে।

এর আগে লন্ডনভিত্তিক পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠান সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানায়, গত রোববার বিদ্রোহীদের হাতে বাশার আল–আসাদের সরকার পতনের পর থেকে সিরিয়াজুড়ে ৩১০টির বেশি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর লক্ষ্য হলো তাদের রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যেকোনো কৌশলগত হুমকির সক্ষমতা নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া—এক বিবৃতিতে এমনটাই জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ।

রোববার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারের পতন হওয়ার পর ইসরায়েলি জঙ্গি বিমানগুলো পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সিরিয়াজুড়ে ব্যাপকভাবে হামলা চালায়।

সোমবার রাতে জাহাজ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে সিরিয়ার আল বায়দা বন্দর ও লাতাকিয়া বন্দরে সিরিয়ার নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজগুলোতে আঘাত হানে ইসরায়েল। এ সময় ওই দুই বন্দরে সিরিয়ার নৌবাহিনীর ১৫টি জাহাজ নোঙর করা ছিল।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিরিয়াজুড়ে চালানো এসব হামলার লক্ষ্য ছিল দেশটির কৌশলগত অস্ত্র ও সামরিক অবকাঠামোগুলো ধ্বংস করা, যেন আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা বিদ্রোহীরা সেগুলো ব্যবহার করতে না পারে। এই বিদ্রোহীদের কিছু অংশের উৎপত্তি আল কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা থেকে হয়েছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার উদ্দেশ্য নেই তাদের, কিন্তু নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যা করা দরকার তাই করছেন তারা।

তিনি বলেন, সিরিয়ার সেনাবাহিনীর রেখে যাওয়া কৌশলগত সামরিক সামর্থ্যে বোমাবর্ষণ করতে বিমান বাহিনীকে অনুমোদন দিয়েছি আমি, যেন সেগুলো জিহাদিদের হাতে গিয়ে না পড়ে।

রোববার আসাদ বিমানযোগে পালিয়ে যাওয়ার পর ইসরায়েলি সেনারা ১৯৭৩ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর সিরিয়ার ভেতরে তৈরি করা অসামরিক এলাকায় ঢুকে পড়ে। তারা সিরিয়ার কৌশলগভাবে গুরুত্বপূর্ণ পর্বত মাউন্ট হেরমনে সিরিয়ার একটি সামরিক পোস্ট দখল করে নেয়। মাউন্ট হেরমন থেকে পুরো দামেস্ক দেখা যায়।

ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাদভ শোশানি দাবি করেছেন, তাদের সেনারা ইসরায়েল-সিরিয়ার মধ্যবর্তী বাফার জোনেই আছে, তবে তারা এর কাছাকাছি ‘কয়েকটি অতিরিক্ত পয়েন্টেও’ অবস্থান নিয়েছে।

সিরিয়ার এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছিলেন, ইসরায়েলি বাহিনী বাফার জোন ছেড়ে সিরিয়ার আরও ভেতরে ঢুকে পড়ে কাতানা শহরে উপস্থিত হয়েছে, যা বাফার জোন থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার ভেতরে এবং দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে অল্প গাড়ি দূরত্বে অবস্থিত।

কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী বাফার জোন ছেড়ে সিরিয়ার অনেকটা ভেতরে ঢুকে পড়েছে বলে যে অভিযোগ এসেছে শোশানি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। ইসরায়েলি সেনারা দামেস্কের দিকে অগ্রসর হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন তিনি।

spot_img
spot_img

এই বিভাগের আরও পড়ুন

চট্টগ্রাম

সারাদেশ

বিশেষ-সংবাদ

বিনোদন