‘নির্বাচনী রোডম্যাপ’ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের দেয়া বক্তব্যে আশাহত বিএনপি। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) গুলশান বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল দলটির স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে এ সভা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, গত ১৬ ডিসেম্বর, বিজয় দিবসে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস জাতির উদ্দেশ্যে যে ভাষণ দিয়েছেন তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং পরবর্তীতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উপদেষ্টার ভাষণের যে ব্যাখ্যা দেন তা নিয়েও আলোচনা হয়। সভা মনে করে, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুসের ভাষণে নির্বাচন সংক্রান্ত বক্তব্য অস্পষ্ট। তাঁর বক্তব্যে নির্বাচনের একটি সাম্ভাব্য সময়ের কথা বলা হলেও নির্বাচনের রোড ম্যাপ সম্পর্কে কোন সুনির্দিষ্ট বক্তব্য রাখা হয় নি। ড. মুহাম্মদ ইউনুস নির্বাচনের সাম্ভাব্য সময় সীমা ২৫ সালের শেষ অথবা ২৬ সালের প্রথম অংশে অনুষ্ঠানের কথা বলেন, যা একেবারেই অস্পষ্ট এবং নির্দিষ্ট কোন সময় উল্লেখ নেই। অথচ তাঁর প্রেস সচিব বলেন যে, ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যা পরস্পর বিরোধী।
তিনি বলেন, এই ধরনের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য আরো বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। যেহেতু নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়ে গেছে সেহেতু, নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিলম্বের প্রয়োজন নেই। নির্বাচন কেন্দ্রীক সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। জনগণ এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার নিকট হতে সুস্পষ্ট বক্তব্য প্রত্যাশা করে। নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা উচিত।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী সংক্রান্ত মাননীয় হাইকোর্টের রায়ের বিষয়ে আমাদের বক্তব্যে উক্ত সংশোধনীতে মোট ৫৫টি দফায় সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদে প্রস্তাবনায় এবং তফশিলে ব্যাপক পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোজন ও বিয়োজন করার মধ্য দিয়ে সংবিধানকে একদলীয় শাসন এবং রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েমের প্রধানতম হাতিয়ারে পরিণত করা হয়। সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্থ করে গণতন্ত্রকে বেহাত করে দেয়া হয়।
‘আদালত উন্মুক্ত আদালতে রায়ের ঘোষাণার সময়ে কিছু কিছু বিষয়ে মন্তব্য ও পর্যবেক্ষণসহ উক্ত সংশোদনীর গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ অবৈধ ঘোষণা করেছেন এবং কিছু অংশ সংরক্ষণ করেছেন এবং অধিকাংশ আগামী সংসদের বিবেচনার জন্য ছেড়ে দিয়েছেন, কিন্তু রীট আবেদনকারীগণ, সংযুক্ত হওয়া রাজনৈতিক দল সমূহ এবং অন্যান্য অংশীজন এবং দেশের আপামর জনসাধারণ আদালতের কাছে আরো বেশী কিছু সিদ্ধান্ত আশা করেছিলো।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।