চট্টগ্রামের রাউজানে বিজয় মেলা নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।
গতকাল শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন- উত্তর জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক এইচ এম নূরুল হুদা, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক রহিম উদ্দিন ওয়াসিম, ছাত্রদল নেতা মোহাম্মদ রিজুয়ান, মোহাম্মদ রাকিব, আবদুস ছালাম, মোহাম্মদ আলমগীর, মোহাম্মদ সাকিল, সাইফুদ্দিন রিবন, মোহাম্মদ আলমগীর, মোহাম্মদ রুবেল মো. রবিসহ ১০ জন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৫ ডিসেম্বর থেকে রাউজান সরকারি কলেজ মাঠে মাসব্যাপী বিজয় মেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরোধের কারণে সেটি উদ্বোধন করা যায়নি। তবে এর জেরে এক সপ্তাহ আগে থেকেই বিএনপির দুই গ্রুপের উত্তেজনা চলছিল। এর মধ্যে গতকাল (শুক্রবার) বিকেলে উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে বিজয় মেলা উদ্যাপনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেয় গোলাম আকবর খন্দকারের পক্ষ। এতে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন, জেলা যুবদলের সভাপতি হাসান জসিম ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি জি এম মোরশেদ প্রমুখ।
অন্যদিকে, বিক্ষোভ মিছিলের খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী সমর্থিত ২০/৩০টি মোটরসাইকেল নিয়ে ৭০জন নেতকর্মী মিছিলে বাধা দেয়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলে উভয় পক্ষের লোকজন সরে যান। ঘটনার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনী নিরাপত্তা জোরদার করেছে।
হামলায় আহত হওয়া গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারী উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মুহাম্মদ রহিম উদ্দিন জানান, তারা শান্তিপূর্ণ মিছিল ও সমাবেশ করতে জড়ো হয়েছিলেন। এ সময় ২৫টি থেকে ৩০টি মোটরসাইকেলে করে কয়েক শ লোক এসে তাদের সমাবেশ পণ্ড করে দেন। এই হামলায় তাদের পক্ষের ছয়-সাতজন আহত হয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
অপরদিকে, হামলায় তাদের পক্ষের চার থেকে পাঁচজন আহত হয়েছেন দাবি করে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী জেলা যুবদলের সহসভাপতি মুহাম্মদ সাবের সুলতান বলেন, ওই সমাবেশ ও মিছিলে আমরা দেখেছি স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের একাধিক দোসর বিএনপি সেজে এসেছে। এ কারণে তাদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মুহাম্মদ রাসেল বলেন, বিজয় মেলা উদ্যাপনকে কেন্দ্র করে রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষ মুখোমুখি ছিল। এর জেরে বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে মারামারি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে বলেও জানান তিনি।