প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছাত্রজীবন থেকেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি সাফল্যে মা ফজিলাতুন নেছা মুজিব অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। মাকে দেখেছি কখনো হতাশ হতেন না। বাবা কারাগারে থাকা অবস্থায় তাকে মুক্ত করা এবং ঘর-সংসার সামাল দিতেন।
তিনি বলেন, বঙ্গমাতার জন্মদিন পালন করতে হয় শোকের মাসে। যা অত্যন্ত কষ্টের। আজ মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯৩তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন এবং ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক-২০২৩’ প্রদান অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, ৭৫ এর ১৫ আগস্ট তারা আমাদের বাড়িতে আক্রমণ করলো, বাবাকে মেরে ফেললো। মা বের হয়ে আসলেন। তারা বললেন, আপনি আমাদের সঙ্গে চলেন। মা বললেন, তোমরা যেহেতু তাকে মেরে ফেলেছো। আমাকেও গুলি করে মেরে ফেলো। আমি কোথাও যাবো না। জীবনের পাশাপাশি মরণেও আমার বাবার সঙ্গী হয়ে চলে গেছেন মা।
তিনি বলেন, বাবা রাজনীতি করেছেন, মা সংসারসহ সব গুছিয়ে রেখেছেন। ছোটবেলা থেকে তিনি একটা মানবিক চরিত্র নিয়ে গড়ে উঠেছেন। বাবার রাজনৈতিক কারণে জীবনের যে চড়াই উৎরাই, মাকে কখনো ভেঙে পড়তে দেখিনি। বাবার পাশে থেকে সব সময় সহযোগিতা করেছেন। এমনকি তাকে অর্থনৈতিক সহযোগিতাও করেছেন। মা পাশে থাকাতে বাবা কিন্তু সফল হয়েছেন। সাধারণ নারীদের মতো আমার মা যদি বলতো, আজকে গয়না দাও, কালকে ফার্নিচার দাও, এটা ওটা দাও এমন করলে তো দেশ স্বাধীন করতে পারতেন না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৫ই আগস্ট ঘাতকের দল শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করেনি, হত্যা করেছে আমার মা, ভাই ও তাঁদের নববধূদের। পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার বিশিষ্ট নারী ও জাতীয় নারী ফুটবল দলকে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পদক-২০২৩ প্রদান করেছেন। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের অবদানকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য আটটি ক্ষেত্রে নারীদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতিবছর সর্বোচ্চ পাঁচজন নারীকে এই পদক দেওয়া হয়।
যে বিশিষ্ট চার ব্যক্তি এই পদক পেয়েছেন তারা হলেন- রাজনীতিতে সাহারা খাতুন (মরণোত্তর), শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে অণিমা মুক্তি গমেজ ও মোছা. নাছিমা জামান ববি, গবেষণায় ড. সেঁজুতি সাহা।
অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক তানিয়া হক বঙ্গমাতার জীবন ও কর্মের ওপর ভিত্তি করে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান বেগম চেমন আরা তৈয়ব।