ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ। বন্ধ হয়ে গেছে সবধরনের যানবাহন চলাচল। ফলে চট্টগ্রামের সঙ্গে বান্দরবান ও কক্সবাজারের যোগাযোগ একপ্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবিরের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৩ হাজার ৪৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বান্দরবানে ২৬৮ মিলিমিটার।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চন্দনাইশের কসাইপাড়া, সাতকানিয়ার কেরানিহাট ও আশপাশের এলাকা এবং লোহাগাড়া উপজেলার কিছু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এ কারণে এই মহাসড়ক দিয়ে যানবাহন চলতে পারছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বান্দরবান থেকে নেমে আসা সাংগু ও ডলু নদীর ঢল এবং কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতে চন্দনাইশ, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়ক ডুবে গিয়ে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ডুবে গেছে বহু একতলা বাড়ি। এছাড়া বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকা এবং মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কে সমস্যা তৈরি হওয়ায় ওই এলাকার লোকজন মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন।
তিন উপজেলার মধ্যে সাতকানিয়ার কেঁওচিয়া, বাজালিয়া, ঢেমশা, সদর ইউনিয়ন, পৌরসভা ও সোনাকানিয়া ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া লোহাগাড়ার পদুয়া ও আমিরাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা এবং চন্দনাইশের ধোপাছড়ি ও দোহাজারী পৌরসভার আশপাশের এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
বন্যায় কোনো কোনো এলাকার বাড়িঘর ডুবে যাওয়ার পর তারা নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারেননি। বন্যাকবলিত এলাকায় দ্রুত ত্রাণ তৎপরতা চালানোর দাবি জানিয়েছেন দুর্ভোগে পড়া বাসিন্দারা।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হুছাইন মুহাম্মদ বলেন, বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকায় প্রশাসনের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া শহরে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের নিরাপদে স্থানান্তর করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। আগামী তিনদিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
