১৪ বছর বয়স কায়রান আমান কাজীর। ভাবছেন মিডল স্কুলের কোনো বালক? হ্যাঁ বালক সে বটে। তবে মিডল স্কুলের নয়, এই বয়সে সে সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েশন।
আমরা যে কায়রানের কথা বলছি, সে বাংলাদশি বংশদ্ভুত এক আমেরিকান। মাত্র ১৪ বছর বয়সে সে সম্পন্ন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাচেলর ডিগ্রি। বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম স্যান্টা ক্লারা ইউনিভার্সিটি। তাদের প্রতিষ্ঠার ১৭২ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কেউ এত কম বয়সে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করলো।
আরও বড় কথা হচ্ছে কায়রান কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েশন সম্পন্নই করেনি। এরই মধ্যে পেয়ে গেছে চাকরির অফার। আর তা কোথায়? স্পেসএক্স-এ। তাদের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে এরই মধ্যে কায়রানকে নিয়োগ দিয়েছে স্পেসএক্স। আগামী জুলাইয়ে ওয়াশিংটন ডিসিতে স্পেসএক্সের কার্যালয়ে চাকরি জীবন শুরু করবে এই ছোট্ট ছেলেটি।
ছেলেটি এই জন্য বলা যে বাস্তবিকই এক বালক এই কায়রান আমান কাজী। হোক সে বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজুয়েট, কিংবা ফরচুন হান্ড্রেড কোম্পানির অন্যতম কোম্পানির সফটওয়্যর ইঞ্জিনিয়ার!
“এখনো বালসুলভ ভাবভঙ্গী, কথাবার্তা তার, জ্ঞানেই না বড় হয়েছে, বয়সে তো ছোট্টটিই রয়ে গেছে,” এভাবেই বলছিলেন কায়রানের নানী সৈয়দা হাসনা বেগম।
টেলিফোনে যখন কথা হয়, তার কণ্ঠে ঝরে পড়ছিলো আনন্দ-উচ্ছ্বাস। জানালেন নাতির এই বিশাল অর্জনের তার খুশির সীমা নেই। নিউইয়র্কের বাসিন্দা হাসনা বেগম ছুটে গেছেন স্যানফ্রান্সিসকোতে। সেখানেই কায়রান আমান কাজী তার বাবা মুস্তাহিদ কাজী ও মা জুলিয়া কাজীর সঙ্গে থাকে।
তবে পরিবারটি শিগগিরই ওয়াশিংটন ডিসিতে স্থানান্তর হবে। সেখানে কর্মযোগে যেতে হবে কায়রান কাজীকে। কিন্তু অতটুকু ছেলেকে তো আর বাবা-মা একা ছাড়তে পারবেন না। আর এত ছোট বয়সে তাকে ডরমে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে না। ফলে বাবা-মাসহ শিগগিরই ওয়াশিংটনের বাসিন্দা হচ্ছে পরিবারটি। প্রকৌশলী বাবা ও ব্যাংকার মা কায়রান আমান কাজীর।
পরিবারের সকলেই উচ্ছ্বসিত আগামী ১৮ জুনের গ্রাজুয়েশন সেরিমনি নিয়ে। সেদিন কায়রান আমান কাজীকে আনুষ্ঠানিকভাবে ডিগ্রি হস্তান্তর করা হবে। আর সে কারণেই স্যানফ্রান্সিসকো গেছেন সৈয়দা হাছনা। তিনি বলেন, এটা আমাদের পরিবারের জন্য একটা বড় ব্যাপার।
স্পেস-এক্স এ যোগ দিতে যাওয়া নিয়ে কায়রানের উচ্ছ্বাস অনেক বেশি, তবে চাকরি নয়, নিজে কিছু একটা আবিষ্কার করতে চায় কায়রান।
কায়রান সাধারণ কোনো শিশু নয় তা এই খবরে স্পষ্ট। সবার আগে বিষয়টি টের পান তার মা। একটি সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ওর জন্মের কয়েক মাস পরেই কিছুটা ব্যতিক্রমি বিষয় তার চোখ পড়ে। দুই বছর বয়সেই সে পুরো বাক্য বলতে শিখে যায়। তখনই চিকিৎসকরা বুঝতে পারেন তার বুদ্ধিমত্তার মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি। সে বছরই তার প্রি-স্কুল শুরু হয়ে যায়।
এরপর কায়রানকে “অত্যন্ত মেধাবী” হিসাবে চিহ্নিত করা হলো আর দেখা গেলো তার আইকিউর মাত্রা ৯৯.৯৯ শতাংশ মানুষের চেয়ে আলাদা। ১০ম জন্মদিনের আগেই তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো কলেজে।