ইন্টার মিলানকে হারিয়ে প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে ম্যানচেস্টার সিটি।
ম্যানচেস্টার সিটি তাদের ইতিহাসে প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে এবং ইন্টার মিলানকে ১-০ গোলে হারিয়ে ট্রেবল নিশ্চিত করেছে।
ইস্তাম্বুলের আতাতুর্ক অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচে ইন্টার মিলানকে একমাত্র গোলে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জিতেছে গার্দিওলার শিষ্যরা। ফলে দ্বিতীয় ইংলিশ দল হিসেবে তারা ট্রেবল পূর্ণ করার গৌরব অর্জন করেছে।
ম্যাচের ৬৮ তম মিনিটে স্প্যানিয়ার্ড রদ্রির গোলে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন এবং এফএ কাপ বিজয়ীরা এই মৌসুমে তিনটি ট্রফি ঘরে তুলতে সমর্থ হয়।
১৯৯৯ সালে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের গড়া ত্রিমুকুটের নজির স্পর্শ করল তারা। পেপ গার্দিওলা কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর একে একে ১৩টি ট্রফি জিতেছে সিটি। কিন্তু আলেয়ার মতো হাতছানি দিয়েও দূরেই থেকে গিয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। দু’বছর আগেও ফাইনালে পৌঁছেছিল সিটি। চেলসির কাছে হেরে ইওরোপ সেরা হওয়ার স্বপ্ন মুলতুবি রাখতে হয়েছিল। অবশেষে মরীচিকা বাস্তব হয়ে ধরা দিল রড্রির গোলে।
অথচ ফাইনালে কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছিল সেই চেনা ছন্দ। পুরো মৌসুম ধরে যে পাসের গতি, ছন্দ ছিল সিটির খেলার বৈশিষ্ট্য, সেটাই উধাও হয়ে গিয়েছিল। এমনকী রিয়েল মাদ্রিদের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধেও সেমিফাইনালে নিজেদের চেনা বিধ্বংসী মেজাজে দেখা গিয়েছিল পেপ গার্দিওলার দলকে।
ইন্টার মিলানের বিরুদ্ধে প্রথম মুহূর্ত থেকেই ছিল ম্লান। সিমোনে ইনজাঘির ইতালিয়ান রক্ষণ টপকানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আর এই কাজ আরও কঠিন হয়ে যায় মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইন চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ায়। গত ফাইনালেও চেলসির বিরুদ্ধে প্রথমার্ধেই মাঠ ছেড়েছিলেন ডি ব্রুইন।
প্রথমার্ধে সে অর্থে গোলমুখ খুলতেই পারেনি কোনও দল। দ্বিতীয়ার্ধে এডিন জেকোর বদলে রোমেলু লুকাকুকে নামান ইন্টার কোচ। সিটি রক্ষণের উপর চাপ বাড়ে। কিন্তু কাউন্টার অ্যাটাকে গোল পায় পেপ গার্দিওলার দলই। রড্রির বিদ্যুৎ গতির শট ৬৮ মিনিটে খাতা খোলে। পরের মুহূর্তেই ডিমারকোর হেড ক্রসবার ছুঁয়ে বাইরে যায়।
এক গোলে পিছিয়ে পড়েই আক্রমণে গতি বাড়ায় ইন্টার । কিন্তু প্রতিবার সিটির গোলকিপার এডারসনের হাতে সব চেষ্টা ব্যার্থ হয়ে যায়। ইতিহাস রচনা হয় আতার্তুক স্টেডিয়ামে। এত প্রতিক্ষার পর পূর্ণতা পেল ম্যান সিটির ফুটবল যাত্রা।
সিটি অধিনায়ক ইলকাত গুন্ডোগান বিটি স্পোর্টকে বলেছেন “অবিশ্বাস্য রাত, আমি খুব খুশি। ভাসায় বোঝানো মুশকিল। আমি মনে করি আজ আমরা ইতিহাস তৈরি করেছি” ।
“এটা পরিষ্কার ছিল যে এটি উভয় দলের জন্য একটি কঠিন ম্যাচ হবে। প্রথমার্ধে আমরা আমাদের সেরাটা দিতে পারিনি। এটি একটি ৫০-৫০ খেলা ছিল। কিন্তু একটি গোলই পার্থক্য তৈরি করে দিয়েছে যেমনটি প্রায়শই ফাইনালে করে। আমরা নিজেদের খুব ভাগ্যবান মনে করি যে এটা আমাদের পক্ষেই ছিল”।
“আমরা জানতাম সবাই ট্রেবল নিয়ে কথা বলছে। তাই আমাদের উপর চাপ ছিল। কিন্তু আমি মনে করি এই দলটি সম্ভাব্য সর্বোত্তম উপায়ে চাপ সামলানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে”।
সিটির মালিক শেখ মনসুর বিন জায়েদ আল নাহিয়ান সিটির ক্রাউনিং মুহূর্ত দেখতে উপস্থিত ছিলেন। ১৫ বছরের মধ্যে তিনি ব্যক্তিগতভাবে দ্বিতীয়বার তার দলের খেলা দেখতে উপস্থিত হয়েছিলেন।