Google search engine
প্রচ্ছদলিডপরিচয় মিলেছে খুন হওয়া ব্যক্তিদের, যা বললেন পুলিশ ও...

পরিচয় মিলেছে খুন হওয়া ব্যক্তিদের, যা বললেন পুলিশ ও জাহাজমালিক

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নীলকমল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় মেঘনা নদীতে নোঙর অবস্থায় থাকা মেসার্স বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের আল বাখেরাহ নামক জাহাজ থেকে ৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গুরুতর আহত একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

নিহতরা হলেন- জাহাজের মাস্টার কিবরিয়া, ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রীজার সজিবুল, আজিজুল ও মাজেদুল ইসলাম। নিহত একজনের নাম জানা যায়নি। আর আহত ব্যক্তি হলেন- জুয়েল। আহত ও নিহত ব্যক্তিদের বাড়ি নড়াইল জেলায়। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ওই ইউনিয়নের মাঝের চর নামক স্থান থেকে নিহতদের মরদেহ ও আহতদের উদ্ধার করে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ।

জাহাজে ডাকাতিতে বাঁধা দেয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন করেন নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মোশফিকুর রহমান।

তবে ডাকাতি নাকি শত্রুতার কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে, তা নিয়ে জানতে চাইলে জাহাজটির মালিক দিপলু রানা বলেন, আমি জানি না কীভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, কারা ঘটিয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে আসল ঘটনা বের করতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম থেকে রওনা হওয়ার পর রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জাহাজটির চালকের (মাস্টার) সঙ্গে তার সর্বশেষ কথা হয়। তখন চালক জানিয়েছিলেন, মেঘনা নদীতে তারা জাহাজের বহরের মধ্যেই ছিলেন। তবে সকালে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও কেউ সাড়া দেননি।

বারবার যোগাযোগ না করে কাউকে না পেয়ে আমাদের আরেকটি জাহাজের (মুগনি-৩) নাবিকদের বিষয়টি জানাই। ওই জাহাজ এমভি আল বাখেরার কাছাকাছি ছিল। তারা আল-বাখেরার কাছাকাছি যাওয়ার পরই হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পারেন বলেও জানান তিনি।

মেসার্স বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের অপর জাহাজ মুগনি-৩ এর মাস্টার বাচ্চু মিয়া ও গ্রীজার মো. মাসুদ জানান, সার বহনকারী আল বাখেরাহ রোববার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসে। এরই মধ্যে কোম্পানির মালিক বাখেরাহ জাহাজে ফোন করে কাউকে পায়নি।

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় মুগনি জাহাজ থেকে যোগাযোগ করার জন্য বলে। ওই সময় মুগনি জাহাজটি মাওয়া থেকে ঘটনাস্থল দিয়ে অতিক্রম করার সময় বাখেরাহ জাহাজটি দেখতে পায়। ওই সময় তারা জাহাজের লোকদের রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ৯৯৯-এ কল দেয় বলেও জানান তারা।

এদিকে ৯৯৯ এ কলের সূত্র ধরে চাঁদপুর থেকে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মোশফিকুর রহমানের উপস্থিতে কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ জাহাজ থেকে প্রথমে ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করে এবং তিনজনকে আহত অবস্থায় চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।

এ বিষয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আনিসুর রহমান বলেন, জুয়েল নামে আহত একজনের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গলা ও শ্বাসনালীও কাটা ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। আর সজিবুল ও মাজেদুলকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মাথায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

নৌ পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, জাহাজে ডাকাতি করতে বাঁধা দেয়ায় তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাটির তদন্ত চলছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, আহত একজন হাতের ইশারায় জানিয়েছে তারা ৮ জন ছিলেন। ঘটনাটি কিভাবে হয়েছে এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। ডাকাতি, কিংবা অন্য কোনো কারণে হতে পারে। তদন্ত করার পরে জানা যাবে। নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সঙ্গে নিরাপত্তা বিষয়ে কথা বলেছি। কারণ এই রুটে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল করে। যাতে করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়।

spot_img
spot_img

এই বিভাগের আরও পড়ুন

চট্টগ্রাম

সারাদেশ

বিশেষ-সংবাদ

বিনোদন