জুলাই-আগস্ট গণহত্যাসহ গুম-খুনের বিচারের আগে আওয়ামী লীগের কোনো পুনর্বাসন নয় বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আমাদেরকে অবশ্যই সজাগ থাকতে হবে। আশপাশের ফ্যাসিবাদ যে কোনো সময় মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে কুমিল্লার লাকসাম পাইলট হাইস্কুল মাঠে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষ এসব কথা বলেন তিনি।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, মাদার অব টেরর শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে যথাযথ জায়গায় আমরা তাকে পাঠিয়েছি। এই মাদার অব টেরর ভারতে বসেও আমাদের বিরুদ্ধে তার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখছে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান রাখতে হবে।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ নিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের বক্তব্য প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, জুলাই গণআন্দোলনের শহিদদের রক্তের বিচার এবং গত ১৫ বছরের গুম-খুনের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন হওয়ার প্রশ্ন প্রাসঙ্গিক নয়। আপনারা যারা আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করতে চাচ্ছেন আপনারা রাজনৈতিক স্বার্থে কম্প্রোমাইজ করতে পারেন। কিন্তু যারা রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশের ঊর্ধ্বে উঠে আমরা যারা এই দেশের টানে রাস্তায় নেমে এসেছিলাম, আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আপনাদের ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসন করতে হবে। তবে আমরা যতদিন বেঁচে আছি, আমরা থাকতে এই বাংলাদেশে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, রূপসা থেকে পাথুরিয়া- এক ইঞ্চি মাটিও ফ্যাসিবাদের জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে না।
জাতীয় পার্টিকে ফ্যাসিবাদের দোসর উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির ওপর ভর করেই কিন্তু ফ্যাসিবাদ মহীরুহ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ইতোমধ্যেই আমরা শুনেছি, জাতীয় পার্টি বলেছে আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি নাকি দেশের ৫০ ভাগ মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করে। জাতীয় পার্টি হলো জাতীয় বেইমান। তারা অভ্যুত্থান-পরবর্তী এই বাংলাদেশে শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে এমন দুঃসাহস কীভাবে পায়?
রাজনৈতিক দলের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, এই গণ-অভ্যুত্থান অত্যন্ত প্রেস্টিজিয়াস বিষয়। এটির ক্রেডিট অবশ্যই আমরা যার যার জায়গা থেকে নেব। কিন্তু ক্রেডিট নিতে গিয়ে এটি যেন ভুলে না যাই, যে উদ্দেশে গণ-অভ্যুত্থান হয়েছিল সেই উদ্দেশের সঙ্গে আমরা যেন কখনো কম্প্রোমাইজ না করি।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই গণ-অভ্যুত্থানে যে স্পিরিট নিয়ে ওয়াসিম-মুগ্ধ-আবু সাঈদ রক্ত দিয়েছেন, আমরা এর ক্রেডিট নেওয়ার প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত হয়ে গিয়েছি। কিন্তু যে উদ্দেশে রক্ত দিয়েছেন সেটি বাস্তবায়নে আমরা কতদূর এগোলাম সে হিসাব এখন আর অনেক রাজনৈতিক দলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রিফাত রশিদ, নুসরাত তাবাসসুম, তরিকুল ইসলাম, সিনথিয়া জাহিন আয়েশা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমিল্লা জেলা আহ্বায়ক মুহাম্মদ সাকিব হোসাইন প্রমুখ।