পশ্চিমাদের সতর্ক করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে তাদের অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার পর চলমান যুদ্ধ এখন বৈশ্বিক সংঘাতে পরিণত হচ্ছে। তাই মস্কো ওসব দেশের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালাতে পারে।
মস্কোর স্থানীয় সময় শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাত ৮টার পর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রই বিশ্বকে বৈশ্বিক সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে দাবি করে কঠোর হুঁশিয়ারিও দেন পুতিন। তিনি বলেন, ইউক্রেনের আগ্রাসী পদক্ষেপ বাড়লে আমরাও সমান দৃঢ়তার সঙ্গে জবাব দেব।
গত ১৯ নভেম্বর ইউক্রেন মার্কিন এটিএসিএমএস এবং ২১ নভেম্বর ব্রিটিশ স্টর্ম শ্যাডো ও মার্কিন হিমার্স ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় হামলা চালানোয় পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে দাবি করে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটিশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের জবাবে ইউক্রেনের একটি সামরিক স্থাপনায় নতুন ধরনের হাইপারসনিক মাঝারি-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে রাশিয়া। এমন আরও হামলা চলতে পারে।
মার্কিন অস্ত্রে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে চালানো ইউক্রেনীয় হামলায় তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে ২১ নভেম্বর ব্রিটিশ দিয়ে কুরস্ক অঞ্চলে একটি কমান্ড সেন্টারে হামলা চালানো হয়েছে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে জানিয়ে পুতিন বলেন, শত্রুর এসব অস্ত্র ব্যবহার সামরিক কার্যক্রমের গতিপথ বদলাতে পারবে না।
ব্রিটিশ-আমেরিকাসহ ইউক্রেনের মিত্রদের সতর্ক করে দিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, যেসব দেশ তাদের অস্ত্র আমাদের সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানোর জন্য ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছে, তাদের সামরিক স্থাপনাগুলোতেও আঘাত করার অধিকার রাশিয়ার রয়েছে। কেউ যদি রাশিয়াকে দুর্বল মনে করে, তবে তারা ভুল করছে। আমরা প্রতিটা হামলার জবাব অবশ্যই দেব।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে রাশিয়া। প্রথমে তাদের লক্ষ্য ছিল দ্রুত রাজধানী কিয়েভ দখল করে নেয়া। তবে ব্যর্থ হয়ে পরে মূলত পূর্বাঞ্চলের দনবাস দখলে মন দেয় তারা। দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক নিয়ে দনবাস অঞ্চল গঠিত। এই অঞ্চলে গত দুই মাসে বড় অগ্রগতি পেয়েছে রুশ বাহিনী। এই অঞ্চলসহ ইউক্রেনের ২০ শতাংশ ভূখণ্ড এখন রাশিয়ার দখলে। এরমধ্যে আজ (শুক্রবার) ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়ার অগ্রগতিকে এগিয়ে নেয়ার অংশ হিসেবে সুমি শহরে ড্রোন হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। এতে দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১২ জন।