প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,‘সংবাদপত্রকে বলে সমাজের দর্পণ। বাস্তবে তাই। এই সংবাদপত্র দেখলেই অনেক তথ্য পাওয়া যায়। আমি নিয়মিত শুধু পড়িই না, কোন সমস্যা দেখলে তার ছবি তুলে আমার অফিসের কার কাছে পাঠালে কাজ হবে তার কাছে পাঠিয়ে দিই। সংবাদপত্র থেকে এই সংবাদগুলো পাওয়া যায়। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক সহজ হয়।’
সোমবার (১০ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে অসুস্থ, অসচ্ছল ও আহত ৪৩৮ সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের মাঝে প্রায় ৩ কোটি ৪১ লাখ টাকার আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণকালে এ কথা বলেন।
দেশের অগ্রযাত্রা ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা সমালোচিত হয়- এমন কোনও সংবাদ প্রচার না করার জন্য সাংবাদিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আপনারা এমন কোনও সংবাদ প্রকাশ করবেন না, যা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে এবং এর চলমান অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত করে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সবসময় গণমাধ্যমের গঠনমূলক সমালোচনাকে স্বাগত জানাই। কারণ এতে আমরা নিজেদের সংশোধন করে নিতে পারি।’ গঠনমূলক সংবাদ সরকার চালাতে সাহায্য করে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা সাংবাদিকদের আবাসনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছি। ইতিমধ্যে অনেকেই প্লট পেয়েছেন, কেউ কেউ তা বিক্রিও করেছেন। সরকারিভাবে অনেক ফ্ল্যাট তৈরি করা হয়েছে। সামান্য কিছু টাকা জমা দিয়ে সাংবাদিকরা চাইলে কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করে এসব ফ্ল্যাট নিতে পারবেন।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘এদেশে কোনো মানুষ ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না। তাদেরকে আমরা ঘর করে দিচ্ছি। আমরা চাই প্রত্যেকের একটা ঠিকানা হবে। সেই সাথে তাদের আমরা বিনা সুদে ঋণ দিচ্ছি, কাজের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘ন্যাম সম্মেলনের জন্য আমরা যখন ফ্ল্যাট তৈরি করি তখনই আমার একটা লক্ষ্য ছিল সম্মেলন শেষে এই ফ্ল্যাটগুলো কবি, শিল্প, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের দেব। কারণ, তাদের চাকরির কোনো স্থায়িত্ব থাকে না। যখন তারা বৃদ্ধ বা অসুস্থ হয়ে যায় কি করে চলবে? সরকারি চাকরি যারা করেন তারা তো অবসর ভাতা পান, আমাদের রাজনীতিবিদদের জন্যও কিছু থাকে না, আবার সাংবাদিকদেরও কিছু থাকে না। এটাই বাস্তবতা। তাই সরকারি ফ্ল্যাটগুলো চাইলে আপনারা সাংবাদিকরা নিতে পারেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যম অবশ্যই সরকারের সমালোচনা করবে এবং স্বাধীনতা ভোগ করবে, তবে তা যথাযথ দায়িত্ববোধ ও কর্তব্যপরায়ণতার সঙ্গে করা উচিত। আমি চাই বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা (দায়িত্বহীন সাংবাদিকতার কারণে) আর বাধাগ্রস্ত হবে না।’
স্বাধীনতা উপভোগ করার অধিকার সবার আছে, তবে তাদের দায়িত্বশীল হতে হবে, উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আপনারা অবশ্যই স্বাধীনতা উপভোগ করবেন। তবে আপনাদের দায়িত্বশীলতা এবং কর্তব্যপরায়ণতা দেখাতে হবে।’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ্য সচিব মো. হুমায়ন কবির খন্দকারও বক্তব্য দেন। এসময় বিএফইউজে এবং ডিইউজের নেতারাসহ বিভিন্ন সংবাদিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।