রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান রোসাটমের মহাপরিচালক (ডিজি) আলেক্সেই লিখাচেভ দুই দিনের সফরে বাংলাদেশে আসছেন । চলতি মাসের শেষ দিকে লিখাচেভ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন করবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্রগুলো থেকে এ তথ্য জানা যায়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, রাশিয়ার পক্ষ থেকে কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে রোসাটমের মহাপরিচালকের সৌজন্য সাক্ষাৎ চাওয়া হয়। রোসাটমের ডিজি ৩০ ও ৩১ জুলাই বাংলাদেশ সফরে আসবেন। দ্বিতীয় দিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন তিনি।
রাশিয়া থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য পারমাণবিক জ্বালানি ইউরেনিয়াম আসা শুরু করবে সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে। রোসাটমের মহাপরিচালকের এ সফরে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালুর আগে চলে আসা নিউক্লিয়ার ফুয়েলের সংরক্ষণ, নিরাপদে পরিবহন নিয়ে বাংলাদেশের পরিকল্পনা জানতে চাইবেন লিখাচেভ।
চলতি বছরের ১২ এপ্রিল রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটমের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সে সময় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ঘোষণায় বলা হয়, ইউক্রেন যুদ্ধে মদদ দেওয়ায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল ঠিকাদার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটমকে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান রোসাটমের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে পড়তে পারে নিষেধাজ্ঞায়- এমন বার্তাও দিয়েছিল ওয়াশিংটন।
রোসাটমকে নিষেধাজ্ঞার ফলে তখন রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রর বাস্তবায়ন নিয়ে বারবার অনিশ্চয়তার কথা আসছিল। তবে ঢাকা ও মস্কোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা রূপপুর প্রকল্পে কোনো প্রভাব ফেলবে না। বাংলাদেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মিত হচ্ছে রুশ সহায়তায়।
দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের নভেম্বরের শেষ প্রান্তে। সে সময় বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুল্লির জন্য কংক্রিটের মূল স্থাপনা নির্মাণের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন স্বশরীরে রূপপুরে উপস্থিত ছিলেন রোসাটমের মহাপরিচালক। সেখানে অনুষ্ঠানের ফাঁকে রূপপুরের প্রকল্প কার্যালয়ে সরকারপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন তিনি। পরবর্তী সময়ে গত বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশ সফরকালেও গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন রোসাটমের মহাপরিচালক।