Google search engine
প্রচ্ছদচট্টগ্রামচট্টগ্রামে রোজার শুরুতেই ঈদের আমেজ পাইকারি কাপড়ের বাজারে

চট্টগ্রামে রোজার শুরুতেই ঈদের আমেজ পাইকারি কাপড়ের বাজারে

চট্টগ্রামের পাইকারি কাপড়ের বাজারগুলোতে রোজার শুরুতেই ঈদের আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মাসব্যাপী রোজার শেষে ঈদ হলেও ঈদ প্রস্তুতি নিতে এখনই থানকাপড়ের (সেলাইবিহীন) দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। আগেভাগে থানকাপড় কিনে দর্জির দোকানে দিয়ে পছন্দের ডিজাইনে সেলাই করে নিতেই এই প্রস্তুতি। ক্রেতাদের এমন আগ্রহের কারণে পাইকারি কাপড়ের বাজারগুলো জমজমাট হয়ে উঠছে।

চট্টগ্রামের থানকাপড়ের পাইকারি বাজারের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় টেরিবাজার। এই বাজারে কথা হয় হালিশহর এলাকার গৃহিনী উম্মে কুলসুমের সাথে। তিনি জানান, তার দুই মেয়ের জন্য নেট কাপড়ের চার সেট থ্রিপিসের কাপড় কিনেছেন। সেগুলো হালিশহর এলাকার একটি টেইলার্সের কাছে সেলাই করতে দিবেন।

মেয়েদের বায়না অনুযায়ী সেলাইয়ের পর সেগুলোর উপর সুতো, চুমকি ও পাথরের কাজ করাবেন। তাই আগেভাগেই সেলাই করতে দিচ্ছেন।

টেরিবাজারের ‌‘মনে রেখো’ নামের একটি শোরুমের বিক্রয়কর্মী মাসুদ উল্লাহ বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ ধরেই থানকাপড়ের বেচাকেনা বেশি হচ্ছে। প্রতি বছর রোজার শুরুর দিনগুলোকে টার্গেট করে থানকাপড় বিক্রির লক্ষ্য থাকে।এবারো ভালো বিক্রি হয়েছে। ’

টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল হক বলেন, ‘১০ রোজার পর থেকে দর্জিরা আর ক্রেতাদের কাছ থেকে সেলাইয়ের অর্ডার নেন না। এ কারণে রোজার শুরুতেই সেলাইবিহীন কাপড় কিনে দর্জির হাতে পৌঁছে দেয়ার টার্গেট থাকে সবার। গত দুই দিন টেরিবাজারের বেশ ভালো বিক্রি হয়েছে। তবে প্রথম দুই রোজায় একটু কম হবে।

এরপর ১০ রোজা পর্যন্ত থানকাপড় বিক্রি চলবে। এরপরে শাড়ি, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি ও রেডিমেড কাপড় বিক্রি শুরু হবে। ’
টেরিবাজার ছাড়াও নগরীর সেন্ট্রালপ্লাজা, চকবাজার, শপিং সেন্টার, মিমি সুপার মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেটের দোকানগুলোতে পাইকারি ও খুচরা মূল্যে সেলাইবিহীন থানকাপড় বিক্রি হয়। নারী ক্রেতাদের পাশাপাশি পুরুষরাও শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবীর কাপড় কিনতে ছুটছেন এসব বাজারে। বিক্রেতারা জানান, থানকাপড়ের পাশাপাশি সেলাইবিহীন থ্রিপিস, ফোরপিস, পাঞ্জাবি-পায়াজামা, শার্ট-প্যান্টের কাপড় গজের হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। তবে নারীদের আগ্রহ ভারতীয় ও পাকিস্তানি কাপড়ে।

এদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, এবারের থানকাপড়ের বাজারে চড়া মূল্য আদায় করছেন বিক্রেতারা। গতবছরের তুলনায় এবার কাপড়ের দাম বেশি। যদিও বিক্রেতাদের ভাষ্য অনুযায়ী, ডলারের উচ্চ মূল্যের কারণে আমদানি করা কাপড়ের ক্রয়মূল্য আগের চেয়ে বেড়ে গেছে। একইসাথে সুতার মূল্য বৃদ্ধি, শ্রমিক ও পরিবহনের খরচও বেড়েছে। একারণে দাম কিছুটা বাড়তি।

বাড়তি দামের বিষয়টি স্বীকার করছেন কিছু বিক্রেতাও। সেন্ট্রাল প্লাজার এক দোকান মালিক বলেন, ‘এখনতো সবকিছুর দাম বেশি। বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, তাই বিক্রয়মূল্যও একটু বেশি। আবার এখন সবকিছু অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। বাড়তি দামে ক্রেতারা আগ্রহ হারায়। আবার প্রত্যেকের চাহিদাও ভিন্ন। তাই সব রকমের কাপড়ও তুলতে হচ্ছে। আবার বিক্রয়মূল্য নির্ধারণেও চ্যালেঞ্জ নিতে হচ্ছে। ’

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি সালেহ আহমেদ সোলেমান বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা প্রতি বছরই সাধ্যমাফিক প্রস্তুতি নেন। কিন্তু করোনাসহ নানা কারণে গত কয়েক বছর নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে। এরমধ্যে বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্ব গতিসহ নানা কারণেও ক্রেতারাও চাপের মুখে আছেন। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি ভালো মনে হচ্ছে। তবে আসল বেচাকেনা দশম রোজার পর থেকে শুরু হবে। তখন সার্বিক পরিস্থিতি বোঝা যাবে। ’

spot_img
spot_img

এই বিভাগের আরও পড়ুন

চট্টগ্রাম

সারাদেশ

বিশেষ-সংবাদ

বিনোদন