গ্যাসের জন্য হাহাকার চলছে চট্টগ্রামে, জনদুর্ভোগ উঠেছে চরমে। বন্দরনগরীর বেশিরভাগ এলাকায় বাসা বাড়িতে চুলা জ্বলছে না। দুমাস আগে এই সংকট শুরু হলেও এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রামে কয়েকদিন পর পর এমন ভোগান্তিতে এখন ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ। সমস্যা সমাধানে আশার আলো দেখাতে পারছে না কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপক্ষও।
গেল অক্টোবরের শেষের দিকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার বাসা-বাড়িতে হঠাৎ করেই দেখা দেয় গ্যাস সংকট। বিশেষ করে বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় এই সংকট প্রকট। শুরুতে ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত গ্যাস থাকত না। কিন্তু কিছুদিন ধরে টানা কয়েকদিন গ্যাস না থাকার ঘটনা ঘটছে।
গ্যাস না থাকায় অনেকেই বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বেছে নিয়েছেন রাইস কুকার, ওভেন, গ্যাস সিলিন্ডারসহ নানা মাধ্যম। কিন্তু সবার পক্ষে এসব ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
চট্টগ্রাম বাসিন্দারা বলছেন, সকাল ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অর্থাৎ রান্নার সময়েই গ্যাস থাকে না। রাত ১০টার দিকে গ্যাস আসে। এতে ভোগান্তি বেড়ে যায় অনেক।
প্রতি বছর শীত এলেই দেখা দেয় এমন সমস্যা। এ নিয়ে কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপক্ষের গাফিলতি দেখছে কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। তাদের দাবি সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে।
ক্যাব সহ-সভাপতি এম নাজের হোসাইন জানান, কোনো ধরনের বিকল্প ব্যবস্থা না নিয়ে টার্মিনাল মেইন্টেন্যান্সে পাঠানো গ্যাস কর্তৃপক্ষের উচিত হয়নি। এতে সমস্ত চট্টগ্রামবাসী অনেক ভোগান্তির মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত করছে।
এদিকে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলেও কবে নাগাদ গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে সেটি পরিষ্কার জানাতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) মহাব্যবস্থাপক (প্রকৌশল) শফিউল আজম বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
শিল্প ও আবাসিক খাত মিলিয়ে চট্টগ্রামে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা ৩২৫ মিলিয়ন ঘনফুট। এক সময় সাঙ্গু এবং সেমুতাং গ্যাসক্ষেত্র থেকে উত্তোলিত গ্যাস দিয়ে এ চাহিদা মেটানো যেত, পরে দুটোই বন্ধ হয়ে গেলে ২০১৮ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত পুরোপুরি আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) গ্যাস নির্ভর হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম।