মেয়াদ উত্তীর্ণ মেশিন ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়বহুল হওয়ায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থায়ীভাবে বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে কর্মরত জনবল অন্যত্র বদলি করার জন্য বলা হয়েছে।
রোববার (২১ জানুয়ারি) এ তথ্য নিশ্চিত করেন ভেড়ামারা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান।
জানা গেছে, ডিজেলে চলা ৬০ মেগাওয়াট ভেড়ামারা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেশিন মেয়াদোত্তীর্ণ, জরাজীর্ণ, অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় ২০২২ সালে দুটি ইউনিট বন্ধ করা হয়।
ইউনিটগুলোর মেয়াদকাল ধরা হয় ১৫ বছর। অথচ এক ও দুই নম্বর ইউনিট ৪৬ বছর ধরে চলার পর বন্ধ করে দেয়া হয়। আর ৩ নম্বর ইউনিটটি ৪৪ বছর ধরে সচল আছে। সেটিও স্থায়ীভাবে বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এক ও দুই নম্বর ইউনিট বন্ধের পর প্রায় ২০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রে বদলি করা হয়েছে। তিন নম্বর ইউনিট এখনও সচল। সেখানে ৭৫ জন কর্মরত। তবে ২০২২ সাল থেকে তিন নম্বর ইউনিট থেকে কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় না।
অথচ কেন্দ্রটি রক্ষণাবেক্ষণ, ডিজেল খরচ, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা বাবদ ২০২২ সালে সরকারের খরচ হয়ে গেছে ৮ কোটি টাকা। ২০২০ সালে ১৩ কোটি, ২০২১ সালে ১২ কোটি, ২০২২ সালে ৮ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে।
১৯৭৬ সালের ২৭ এপ্রিল জার্মানির এজি কার্নিস কোম্পানির প্রযুক্তিতে একটি জিট ইউনিট নিয়ে প্রথম উৎপাদনে আসে ভেড়ামারা বিদ্যুৎকেন্দ্র। একই বছরের ২৮ জুলাই দ্বিতীয় ইউনিট চালু হয়। সে সময় ২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট থেকে মোট ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো। চাহিদার কারণে ১৯৮০ সালের ১৯ জানুয়ারি জাপানের হিটাচি কোম্পানির প্রযুক্তিতে ২০ মেগাওয়াটের আরেকটি ইউনিট চালু করা হয়। তখন মোট সক্ষমতা দাঁড়ায় ৬০ মেগাওয়াট।
ভেড়ামারা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের উপব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তিন নম্বর ইউনিটটি দ্রুত বন্ধের জন্য গত বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড আমাদের নির্দেশ দিয়েছে। বর্তমানে ৭৫ জন কর্মরত রয়েছেন। তাদের বদলি করার জন্য লিখিতভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব বন্ধ করতে হবে। কেন্দ্রের জনবল অন্যত্র বদলি করতে ও মেশিনটি বন্ধ করতে বলা হয়েছে।