ইউক্রেনের ভেতরে প্রায় দুই বছরের যুদ্ধের প্রভাব মোকাবেলা করছে অসংখ্য মানুষ। পাশাপাশি ওই অঞ্চলের অন্যান্য দেশে পালিয়ে গেছে লাখ লাখ শরণার্থী। এসব মানুষকে মানবিক সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে, সোমবার (১৫ জানুয়ারি) জাতিসংঘ ৪২০ কোটি ডলারের জন্য আবেদন করেছে। খবর রয়টার্সের।
জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা এবং জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা এক যৌথ বিবৃতিতে, রাশিয়ার সাম্প্রতিক বড় পরিসরের বিমান হামলার কথা উল্লেখ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সহিংসতা “যুদ্ধের বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতির ভয়াবহতাকে” তুলে ধরে। বিবৃতিতে ইউক্রেনে তীব্র শীতের পরিস্থিতির দিকে মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়। বলা হয়, তীব্র শীতের ফলে মানবিক সহায়তা প্রদান এখন আরো জরুরি হয়ে পড়েছে।
জাতিসংঘের তথ্য মতে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার পুর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে ৫৯ লাখের বেশি ইউক্রেনীয় নাগরিক ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পালিয়ে গেছে।
জাতিসংঘ বলেছে, আশ্রয় প্রদানকারী দেশগুলো সহানুভুতির সাথে ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের গ্রহণ করেছে। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে তাদের আরো সহযোগিতা দরকার।
এদিকে, রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধ বন্ধ করতে কিয়েভের শর্ত সম্বলিত ইউক্রেনের ১০ দফা শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে, রবিবার সুইজারল্যান্ডের শহর ডাভোসে সমবেত হয়েছেন ৮৩টি দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টারা। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রাক্কালে তারা এই বৈঠকে বসেন।
ব্রাজিল, ভারত, সৌদি আরব এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতো উদীয়মান অর্থনীতির জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিনিধিরা এই আলোচনায় অংশ নেন। এই দেশগুলো চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে ব্রিকস জোটের সদস্য।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারী ব্রিকস সদস্যরা জেলেন্সকির শান্তি পরিকল্পনার সাথে একমত কি না তা স্পষ্ট নয়। এই শান্তি পরিকল্পনায়, ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে রাশিয়ার সম্পূর্ণ প্রত্যাহার, যুদ্ধাপরাধের জন্য রাশিয়ার জবাবদিহি নিশ্চিত করা এবং রাশিয়া কর্তৃক অপহৃত হাজার হাজার ইউক্রেনীয় শিশুকে ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
রাশিয়াকে আলোচনায় আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। দেশটি ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশের কাছাকাছি অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে। রাশিয়া, কিয়েভের “শান্তি ফর্মুলা”কে অযৌক্তিক বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তারা বলছে, ইউক্রেন মস্কোর অংশগ্রহণ ছাড়া যে শান্তি পরিকল্পনা করছে, তা অবাস্তব।