বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৃহস্পতিবার গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা সরবরাহের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার ঘাটতির কঠোর সমালোচনা করেছে। সংস্থাটি বলেছে সেখানকার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সংস্থাটি আরো বলেছে, ফিলিস্তিন ছিটমহলে স্বাস্থ্য সেবার চাহিদা ক্রমশ বেড়ে গেলেও তা মোকাবেলা করার ক্ষমতা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে।
জাতিসংঘ সংস্থাটি বলেছে, গত ১৫ দিনে এই অঞ্চলে ৫৪ মেট্রিক টন মানবিক সহায়তা পাঠানো সম্ভব হয়েছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় এই সহায়তা একেবারেই অপ্রতুল। খবর এএফপি’র।
সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধাণম গেব্রিয়াসিস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘গাজার সকল মানুষের জীবন রক্ষাকারী স্বাস্থ্য ও মানবিক পরিষেবার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে আমরা যা যা করতে পারি তা করব।’ বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ত্রাণ সরবরাহ অসম্ভব!
সংস্থা’র জরুরী পরিচালক মাইকেল রায়ান গাজার মাটিতে এই মুহূর্তে কর্মীদের মৌলিক সুরক্ষা অনিশ্চিত থাকার বিষয়টিকে ‘বিবেচনাহীন’ বলে মন্তব্য করে বলেন, সংস্থাটি মানবিক সহায়তা প্রেরণের জন্য ন্যূনতম সুরক্ষা প্রাপ্তির প্রাথমিক নিয়মকে গুরুত্বপূর্ণ দেয়নি।
রায়ান বলেন, সংঘর্ষ কবলিত এই হাসপাতালগুলোকে বারবার সাহায্য সরবরাহের অনুমতি দেওয়া সকল পক্ষের দায়িত্ব।
কেবলমাত্র এই ধরনের সুবিধা নিশ্চিত করাকে সুরক্ষাই নয় বরং কর্তৃপক্ষের একটি বিশেষ দায়িত্ব হলো, জনসংখ্যার চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিষেবা ও সরবরাহ নিশ্চিত করা।
টেড্রোস বলেন, গাজার ভয়াবহতার চিত্র অবর্ণনীয়। অঞ্চলটির পরিস্থিতি বর্ণনাতীত উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাসপাতালগুলো আহতদের নিয়ে ঠাসা, করিডোরে ও মর্গ উপচে পড়ছে। ডাক্তাররা অ্যানেসথেশিয়া ছাড়াই অস্ত্রোপচার করতে বাধ্য হচ্ছে। সর্বত্র, আতঙ্ক, মৃত্যু, ধ্বংসযঞ্জ আর ক্ষয়ক্ষতি বিরাজমান।
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যের চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে সেই চাহিদাগুলো পূরণ করায় আমাদের ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন এখন মৃতদের সাহায্য করার আর কোনো সুযোগ নেই। তবে, আমরা জীবিতদের সাহায্য করতে পারি।
গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফাকে ইসরায়েল হামাসের ‘কমান্ড সেন্টার’ ও সদর দপ্তর হিসেবে ব্যবহার করেছে।
আমরা জানিনা ভূখন্ডটিতে পুরোপুরি কী ঘটতে চলেছে। কোথাও কোথাও এই ধরণের সুড়ঙ্গ তলদেশে কী ঘটতে পারে আমাদের কাছে সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য নেই।
ইসরায়েলের উপর হামাসের ভয়ঙ্কর হামলার কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না উল্লেখ করে টেড্রোস জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার জন্য হামাসের প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যাক্ত করেন। তিনি এই সংঘাতকে আরো উসকে দেয়ার পরিবর্তে তা হ্রাস করায় সকলের প্রতি আহ্বান জানান।