তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, কিন্তু ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হবে না। নির্বাচন যথা সময়ে হবে এবং দেশের জনগণ এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে আয়োজিত শান্তি মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন নিয়ে এর আগেও ষড়যন্ত্র হয়েছিল কোনো লাভ হয়নি।
২০১৪ সালে তারা ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে, ২০১৮ সালেও করেছিল, লাভ হয়নি। এবারও যথা সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
যতই ষড়যন্ত্র করুক বিএনপি-জামায়াত কোনো লাভ হবে না। বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করলেও দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সব রাজনৈতিক দল সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
তিনি বলেন, ইসলামের কথা বলে যারা দেশে অশান্তি চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সর্তক থাকতে হবে। বিএনপি জামায়াত ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে বলেছিল আওয়ামী লীগকে ভোট দিলে ইসলাম থাকবে না। অথচ আমাদের সময় ইসলামের সবচেয়ে বেশি কাজ হয়েছে। আমাদের সরকার সময় ৫৬০টি মডেল মসজিদ জেলা উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মুসলমানদের শতবর্ষে দাবি ছিল ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, সেটিও প্রধানমন্ত্রী করেছেন। কওমি মাদরাসা স্বীকৃতিও আওয়ামী লীগ দিয়েছে, এখানে অনেকের সরকারি চাকরিও হয়েছে। শুধু তাই নয় ১ লাখ ২০ হাজার মসজিদ ভিত্তিক মক্তব করা হয়েছে, ইসলামী ফাউন্ডেশনকে আধুনিক করা হয়েছে, মসজিদগুলোতে ৬১০০টি পাঠাগার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের মধ্যে জাহাজে হজযাত্রী পাঠাতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আমাদের সরকার ইসলামের কল্যাণে এ কাজগুলো করেছে আরও অনেক কাজ হাতে নিয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আন্তর্জাতিক শান্তি মহাসমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী বলেন, মহানবীর (দ.) দুনিয়ায় শুভাগমন জগৎবাসীর জন্য আল্লাহ পাকের বিশেষ রহমত ও অনুগ্রহ। প্রিয়নবীর (দ.) শুভাগমন না হলে সৃষ্টি জগৎ অস্তিত্বই লাভ করতো না। রাসূল (দ.) দুনিয়ায় শুভাগমনের মূল উদ্দেশ্যই হলো একটি শান্তি ও সহাবস্থানপূর্ণ মানবিক বিশ্ব সমাজ গড়ে তোলা। আজ সিরিয়া, ফিলিস্তিন, মিয়ানমারসহ তাবৎ দুনিয়ায় যুদ্ধ সংঘাত ও রক্তপাতে জর্জরিত। শক্তিধর দেশগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না করে অস্ত্রের ভাষায় কথা বলছে। নিষেধাজ্ঞা পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে সমগ্র পৃথিবীর মানুষ খাদ্য জ্বালানি সংকটসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত। এ দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে মহানবীর (দ.) আদর্শ অনুসরণের বিকল্প নেই। মদিনার সনদের আলোকে কীভাবে সমতাভিত্তিক, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক আধুনিক কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠন করা যায় সাড়ে চৌদ্দশত বৎসর আগে রাসূলই আমাদের দেখিয়েছেন। শাহ্সূফী সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভান্ডারী বলেন, প্রিয়নবী (দ.) ছিলেন পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রাষ্ট্র নায়ক।
এর আগে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ও লিবারেল ইসলামিক জোটের চেয়ারম্যান এবং মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের বর্তমান ইমাম, আনজুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার সভাপতি হযরত শাহ্সূফী ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী আল্-হাসানীর (মা.জি.আ.) নেতৃত্বে ঈদে মিলাদুন্নবীর জশনে জুলুসে র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা অংশগ্রহণ করেন।
শোভাযাত্রার অগ্রভাগেই দৃষ্টিনন্দন বড় বড় হরফে লেখা ছিল ‘ইয়া নবী ছালামু আলাইকা’, ‘ইয়া রাসূল ছালামু আলাইকা’।
বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) ও আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার ব্যবস্থাপনায় জশনে জুলুসে অংশগ্রহণকারীরা কলেমা খচিত পতাকা, প্লেকার্ড, ফেস্টুন ছাড়াও, বহন করে বাংলাদেশের বিশাল জাতীয় পতাকা।
জুলুসে অংশগ্রহণকারীরা নারায়ে তকবির, নারায়ে রেসালতের স্লোগানে স্লোগানে রাজধানীর রাজপথ মুখর করে তোলেন। র্যালি শেষে সবাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তি মহাসমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন লিবারেল ইসলামিক জোটের চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী