১৯৭৪ সালের ১২ রবিউল আউয়াল বাংলাদেশে প্রথম জুলুছের সূচনা হয় গাউসে জামান আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহ (র.) এর দিকনির্দেশনায়। চট্টগ্রামের বলুয়ার দীঘির পাড় খানকাহ শরিফ থেকে আনজুমানের তৎকালীন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নূর মোহাম্মদ আলকাদেরির নেতৃত্বে জুলুসটি বের হয়েছিল। এর পর থেকে প্রতি বছর আরবী মাসের ১২ রবিউল আওয়াল নবীজীর আগমনে খুশির বার্তা নিয়ে পবিত্র ঈদে মিলাদূন্নবী উপলক্ষে পালিত হয় জসনে জুলুছ।
এ উপলক্ষে চট্টগ্রামের মুরাদপুর ষোলশহর আলমগীর খানকাহ থেকে রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ৫১তম জসনে জুলুছ পবিত্র ঈদে মিলাদূন্নবী (সা:) এর র্যালী সকাল নয়টার দিকে বের হয়। দরবারে আলিয়া কাদেরিয়া সিরিকোট শরিফের হুজুর কেবলা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ (মজিআ) এর সদারতে জুলুছে নেতৃত্ব দেন।সাজ্জাদানশিন পীর আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ সাবির শাহ (মজিআ) ও শাহজাদা আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ কাসেম শাহ (মজিআ)। আয়োজিত জুলুছে লাখো রাসুল প্রেমিকদের সমাগমে তাকবির, দরুদ, হামদ, নাতে রাসুল, গজল, জিকিরে নগরী মুখোরিত হয়ে ওঠে।
জুলুছে সাজ্জাদানশীল পীর ও শাহজাদাকে দেখতে হাজার হাজার রাসুল প্রমিকদের তাপদাহ উপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
জুলুছের র্যালীটি নগরীর বিবিরহাট, মুরাদপুর, মির্জাপুল, কাতালগঞ্জ, চকবাজার অলিখাঁ মসজিদ, প্যারেড মাঠের পশ্চিম পাশ হয়ে চট্টগ্রাম কলেজ, গণি বেকারি, খাস্তগীর স্কুল, আসকার দীঘি, কাজীর দেউড়ি, আলমাস, ওয়াসা, জিইসি, দুই নম্বর গেট ঘুরে জামেয়া মাদ্রাসা মাঠে মাহফিলে আসে। এর আগে কাজীর দেউড়ি মোড়েসময় দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি, কল্যাণ কামনা করে সংক্ষিপ্ত মোনাজাত করেন হুজুর কেবলা।
এদিকে, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর (স.) জশনে জুলুসে অংশ নিতে ভোর থেকে চট্টগ্রাম ও আশপাশের জেলার ভক্তরা আসতে থাকেন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা মাঠে। দেখতে দেখতে কয়েক বর্গকিলোমিটার এলাকা লোকারণ্য হয়ে যায়। জামেয়ার বিভিন্ন ব্যাচের ছাত্র, গাউসিয়া কমিটির বিভিন্ন শাখার কর্মীরা ঈদের খুশিতে মেতে ওঠেন। একই ডিজাইনের পাঞ্জাবি, টুপি, পাগড়ি পরে নজর কাড়েন সবার। মোড়ে মোড়ে শরবত, পানি, চকলেট, খেজুর, রুটি, আমলকীসহ নানা ধরনের খাবার ও পানীয় দেন হুজুর কেবলার ভক্তরা।
আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহ (র.) চট্টগ্রামে জুলুসের নেতৃত্ব দেন ১৯৭৬ সালে। ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি জুলুসে নেতৃত্ব দেন। ১৯৮৭ সাল থেকে তিনি আর বাংলাদেশে আসেননি। তখন থেকে জুলুসে নেতৃত্ব দিচ্ছেন হুজুর কেবলা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ (মজিআ)।