জোহানেসবার্গের কেন্দ্রে অবৈধ আবাসনের একটি পাঁচ তলা ভবনে আগুন লেগে ১২ শিশুসহ ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছে।
এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, একটি নিরাপত্তা গেটে মৃতদেহগুলো স্তুপ হয়ে ছিল, এই বন্ধ গেটের কারণে লোকজন আগুন থেকে পালানোর সুযোগ পায়নি।
জোহানেসবার্গের গৌতেং প্রদেশের ফরেনসিক সার্ভিসের প্রধান থেমবালেথু ম্ফালাজা বলেছেন, মোট ৭৪টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে ২৪ জন মহিলা, ৪০ জন পুরুষ এবং ১০টি মৃতদেহ ‘চেনা যায়নি’।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমাদের ১২টি শিশুও এই ট্র্যাজেডির শিকার হয়েছে।’
সিটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অর্থনৈতিকভাবে হতাশ, অপরাধপ্রবণ এলাকায় পৌরসভার মালিকানাধীন তালিকাভুক্ত ভবনটি পরিত্যক্ত হওয়ার পর অবৈধ আবাসনে পরিণত হয়েছে। সেখানে বসবাসকারীদের বেশিরভাগই বিদেশী বলে এক বাসিন্দা জানিয়েছেন।
কেনি বুপে বলছেন, ‘আমি বেঁচে থাকতে পেরে কৃতজ্ঞ, আমরা অনেকেই দৌড়াচ্ছিলাম, আগুন থেকে বেরোনোর চেষ্টা করছিলাম এবং ধোঁয়ায় নিঃশ্বাস নিতে না পারার কারণে অনেক লোক শেষ পর্যন্ত মারা গেছে।’
২৮ বছর বয়সী বুপে এএফপিকে বলেছেন, তিনি একটি দলে ছিলেন যারা তালাবদ্ধ ফায়ার এস্কেপ গেট ভেঙে নিরাপদে দৌড়াতে সক্ষম হয়েছিলেন, অন্যরা জানালা দিয়ে ‘ঝাঁপ দিয়েছেন’।
আগুন নেভানোর পর পালানোর জন্য ব্যবহৃত কম্বল এবং চাদরগুলো পুড়ে যাওয়া জানালা দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বাবা-মা তাদের বাচ্চাদের বাঁচানোর আশায় রাস্তায় ফেলে দিয়েছিলেন। রাস্তার ওপাশে বসবাসকারী ২৫ বছর বয়সী ম্যাক কাটলেগো বলেন, ‘সেখানে লোকেরা বাচ্চাদের ধরছিল এবং তাদের জন্য গদিও বিছিয়ে দেয়া হয়েছিল।’
উদ্ধারকারীরা ঘটনাস্থল পুলিশের কাছে হস্তান্তরের আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ তল্লাশি অভিযান গুটিয়ে নিয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গকেবেরহাতে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘এটি একটি বড় ট্র্যাজেডি, যে পরিবারগুলো এই ভয়ানকভাবে নিহত হয়েছে।’
সন্ধ্যার পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি বলেছেন, কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করার জন্য ‘পুরোপুরি’ কাজ করছে, বিপর্যয় তদন্ত করা হবে।