সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানাধীন হাজারী গলি এলাকায় দুর্বৃত্তের হামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৭ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে একটি উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করতে গেলে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, কিছুদিন আগে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী একটি ফটোকার্ড শেয়ার করেন। বলা হচ্ছে, সেখানে ইসকন নিয়ে ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য ছিল। ফটোকার্ড সম্বলিত সেই পোস্ট ফের ফেসবুকে শেয়ার করেন হাজারী গলির মিয়া শপিং সেন্টারের একটি দোকানের মালিক। আর সেই পোস্টে ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় সনাতনীদের একাংশ মঙ্গলবার বিকেলে দোকানটি ভাঙচুর করে এবং ওই ব্যবসায়ীর ওপর আক্রমণের চেষ্টা চালায়।
চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুর কাদের চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিক্ষোভ থামাতে গেলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পরে সেনাসদস্যা যান ঘটনাস্থলে। বিক্ষোভকারীরা যৌথবাহিনীর ওপরও হামলা চালায়।
হামলাকারীদের শনাক্ত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান চলছে। এ বিষয়ে বুধবার (৬ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।
এদিকে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) কাজী তারেক আজিজ গণমাধ্যমকে বলেন, হাজারী গলি এলাকার মো. ওসমান নামের এক দোকানদার কয়েক দিন আগে তাঁর ফেসবুকে হিন্দুদের ধর্মীয় সংগঠন ইসকনের নাম উল্লেখ করে একটি পোস্ট শেয়ার করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের কিছু লোক আজ সন্ধ্যার দিকে তাঁর দোকানে গিয়ে হামলা চালায়। ওই সময় তারা বিক্ষোভ করতে থাকে। খবর পেয়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা সেখানে যান। ওসমানকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন তাঁকে তাদের হাতে তুলে দিতে দাবি জানায়। ওই সময় তারা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পরে ওসমানকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।
এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বিক্ষুব্ধ লোকজন যৌথ বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে আবার ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। একপর্যায়ে তারা অ্যাসিডও নিক্ষেপ করে। এতে সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি অঞ্চল) মাহফুজুর রহমানসহ সাত পুলিশ সদস্য আহত হন। এর মধ্যে একজন সামান্য অ্যাসিডদগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।