বিগত ৬৮ বছরে যা হয়নি, তাইই ৩ বছরের ব্যবধানে দুবার ঘটল পাকিস্তান ক্রিকেটে। ঘরের মাটিতে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা সইতে হয়েছে ম্যান ইন গ্রিনদের। ২০২২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ তে সিরিজ হারের পর বাংলাদেশের কাছে ২-০ ব্যবধানের হার। টাইগারদের বিপক্ষে এমন সিরিজ হার কোনোভাবেই মেনে নিতে নারাজ দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররা।
জাভেদ মিয়াঁদাদ, ইনজামাম উল হক কিংবা ইউনিস খানের মতো সাবেক ক্রিকেটাররা সরব হয়েছেন দলের বর্তমান অবস্থা নিয়ে। পাকিস্তান দলের কড়া সমালোচনা করেছেন। মিয়াঁদাদ পাকিস্তানের এমন হারকে বাজে লক্ষ্মণ হিসেবে দেখছেন। দেশটির ক্রিকেটে টেস্টের সর্বোচ্চ রানের মালিক ইউনিস খান সমালোচনা করেছেন দলের ব্যাটারদের।
সাবেক অধিনায়ক মিয়াঁদাদ পিটিআইকে বলেছেন, ‘এটা কষ্টের যে, আমাদের ক্রিকেট এই পর্যায়ে এসেছে। বাংলাদেশকে কৃতিত্ব দিতেই হবে তাদের গোছানো পারফরম্যান্সের জন্য। কিন্তু এই সিরিজে যেভাবে আমাদের ব্যাটিং ভেঙে পড়েছে, তা খুব বাজে লক্ষ্মণ।’
পিসিবির প্রধান হয়ে আসার পরেই একের পর এক রদবদল এনেছেন মহসিন নাকভি। তিনি একইসঙ্গে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পাক ক্রিকেটের বড়ে মিয়া খ্যাত মিয়াঁদাদ বিশ্বাস করেন এর প্রভাবও পড়ছে দলের খেলায়, ‘’আমি শুধু খেলোয়াড়দের দোষ দেব না, কারণ গত দেড় বছরে বোর্ডে (পিসিবি) যা কিছু হয়েছে এবং অধিনায়কত্ব ও ম্যানেজমেন্টের পরিবর্তন দলকে প্রভাবিত করেছে।’
অধিনায়ক হিসেবে পাকিস্তানকে বহু ম্যাচেই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ইনজামাম উল হক। ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে ছিলেন ইমরান খানের ট্রাম্পকার্ড। পাকিস্তানের এমন হার মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে তারও। তবে এই ব্যর্থতায় ব্যাটারদেরই সবচেয়ে বেশি দায় দেখছেন তিনি।
ইনজামামের ভাষ্য, ‘অতীতে সেরা দলগুলোকে হারানোর জন্য হোম সিরিজকে সবসময় আমাদের সেরা সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু এর জন্য তো ব্যাটসম্যানদের রান পেতে হবে। আমাদের ব্যাটাররা অতীতে রান পেয়েছে, কিন্তু এই মুহূর্তে আমি মনে করি, এই সংকট কাটিয়ে উঠতে তাদের মানসিক দৃঢ়তা দরকার।’
একই মনোভাব টেস্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ইউনিস খানের। পাকিস্তানের এই কিংবদন্তিও জোর দিচ্ছেন রান সংগ্রহের দিকে, ‘আমাদের ব্যাটসম্যানেরা অতীতে রান পেয়েছে। কিন্তু এ মুহূর্তে আমার মনে হয় এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে তাদের মানসিকভাবে শক্ত হতে হবে এবং পরিষ্কার চিন্তা ভাবনা করতে হবে।’
বাকিরা ব্যাটারদের কথা বললেও আরেক সাবেক টেস্ট অধিনায়ক ইকবাল কাসিম কথা বলেছেন বোলারদের প্রসঙ্গে। নতুন প্রজন্মের বোলারদের গড়ে তোলার দিকেই মনোযোগ দেয়ার আহ্বান তার। সেই সঙ্গে দেশের মাঠে টেস্ট জয়ে স্পিন নির্ভরতা বাড়ানোর কথাও শোনা গেল তার মুখে, ‘আমাদের এখন সরফরাজ নেওয়াজ, ইমরান খান, ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার বা শোয়েবের সক্ষমতার বোলার নেই। তাই আমাদের এখন ঘরের মাঠে টেস্ট জেতার জন্য স্পিনারদের ওপর ভরসা করা উচিত।’