সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে টেস্ট প্লেয়িং দেশ নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে নিজেদের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ইতিহাস গড়লো সংযুক্ত আরব আমিরাত। জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের বাইরে আইসিসির পূর্ণ সদস্য কোন দলের বিপক্ষে প্রথম জয়ের স্বাদ পেল আরব আমিরাত। সেই সাথে দুবাইয়ের মাঠে ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম জয় রচনা করলো আরব আমিরাত।
এই জয়ের তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতাও আনলো আরব আমিরাত। প্রথম ম্যাচে ১৯ রানে জয় পেয়েছিলো নিউজিল্যান্ড।
গতরাতে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করতে নামে সংযুক্ত আরব আমিরাত। ব্যাট হাতে নেমে আরব আমিরাতের বাঁ-হাতি স্পিনার আয়ান আফজাল খানের ঘুর্ণিতে পড়ে ৩৮ রানেই ৪ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। চ্যাড বোয়েস ২১, মিচেল স্যান্টনার ১ ও ড্যান ক্লেভার শূন্যতে আফজালের শিকার হন।
পঞ্চম উইকেটে ২৭ রান যোগ করে শুরুর ধাক্কা সামলে ওঠার চেষ্টা করেন মার্ক চাপম্যান ও কোলি ম্যাকোঞ্চি। দলীয় ৬৫ রানে চাপম্যান ও ম্যাককঞ্চির জুটি ভাঙ্গেন স্পিনার মোহাম্মদ ফারাজউদ্দিন। ৯ রান করে আউট হন ম্যাককঞ্চি।
ষষ্ঠ উইকেটে ৩২ বলে ৫৩ রান তুলে নিউজিল্যান্ডকে লড়াইয়ে ফেরান চাপম্যান ও জেমস নিশাম। দলীয় ১১৮ রানে নিশামকে ব্যক্তিগত ২১ রানে থামিয়ে আরব আমিরাতকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন পেসার আলি নাসের।
ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হবার আগে টি-টোয়েন্টিতে ষষ্ঠ হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন চাপম্যান। ৩টি করে চার-ছক্কায় ৪৬ বলে ৬৩ রান করেন তিনি । চাপম্যানের হাফ-সেঞ্চুরিতে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪২ রানের সংগ্রহ পায় নিউজিল্যান্ড। ৪ ওভারে ২০ রানে ৩ উইকেট নেন ১৭ বছর বয়সী আফজাল। টি-টোয়েন্টিতে এটিই তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং।
জবাবে ১৪৩ রানের টার্গেটে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় আরব আমিরাত। আরিয়ানাশ শর্মাকে খালি হাতে বিদায় দেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক টিম সাউদি। এই উইকেট নিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানের সমান সর্বোচ্চ ১৪০ শিকারের মালিক হলেন সাউদি।
দ্বিতীয় উইকেটে ৪০ রানের জুটি গড়ে শুরুতে ওপেনারকে হারানোর ক্ষত ভুলিয়ে দেন আরব আমিরাতের অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিম ও বৃত্তিয়া অরবিন্দ। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ২১ বলে ২৫ রান করা অরবিন্দকে শিকার করে জুটি ভাঙ্গেন পেসার কাইল জেমিসন।
৪০ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর নিউজিল্যান্ডের বোলারদের উপর চড়াও হন ওয়াসিম ও আসিফ খান। মাত্র ৩১ বল খেলে ৫৬ রান যোগ করে দলকে লড়াইয়ে রাখেন তারা। এই জুটিতেই ছক্কা মেরে টি-টোয়েন্টিতে মাত্র ২৭ বল খেলে অষ্টম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন ওয়াসিম। তবে হাফ-সেঞ্চুরি করার ১ বল পরই বিদায় নেন তিনি। স্যান্টনারের শিকার হওয়ার আগে ২৯ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৫ রান করেন ওয়াসিম।
দলীয় ৯৬ রানে ওয়াসিম ফেরার পরও নিউজিল্যান্ডের বোলারদের উপর মারমুখী মেজাজেই ছিলেন আসিফ। চতুর্থ উইকেটে বাসিল হামিদের সাথে ২৮ বলে অবিচ্ছিন্ন ৪৮ রান তুলে ২৬ বল হাতে রেখে আরব আমিরাতের জয় নিশ্চিত করেন আসিফ। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ৩৯ ম্যাচ পর আইসিসির সহযোগী কোন দেশের কাছে হারের লজ্জা পেল নিউজিল্যান্ড।
৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৯ বলে অপরাজিত ৪৮ রান করেন আসিফ। ১২ বলে ১২ রানে অপরাজিত থাকেন বাসিল। নিউজিল্যান্ডের সাউদি-স্যান্টনার-জেমিসন ১টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরা হন আরব আমিরাতের আফজাল।
আজ একই ভেন্যুতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি খেলবে নিউজিল্যান্ড ও আরব আমিরা