ভারতের মুম্বাইয়ে আরব সাগরের তীর ঘেঁষে যেন গর্জন তুলেছে আরেকটি সমুদ্র, নাম তার ‘নীল জনসমুদ্র’। ১৩ বছরের শিরোপাখরা কাটিয়ে ক্যারিবীয় দ্বীপ থেকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে ফিরেছে রোহিত শর্মার দল। তাদের বরণে এমন বর্ণাঢ্য আয়োজনই তো মানায়! তবে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে সেই জনসমুদ্রে। মুম্বাইয়ের ম্যারিন ড্রাইভ এতটাই লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়েছিল যে, রোহিতদের বাস এগোনোরও যেন জায়গা নেই। এরপর সেই সাগর ধীরে ধীরে সাঁতরে পেরিয়েছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বাস!
বার্বাডোজে বিশ্বকাপ জয়ের পরও প্রায় তিনদিন হারিকেন বেরিলের কবলে পড়ে আটকে পড়েছিল ভারতীয় দল। ১০৫ ঘণ্টা পর (বৃহস্পতিবার) রোহিত-কোহলিরা দেশে পা রাখতেই নতুন ব্যস্ততা শুরু। যা ইতি ঘটার কথা মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে বিশেষ এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। যেখানে বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়েছে। মাঝে সেখানে তুমুল বৃষ্টি বাগড়া দিলেও, বৃষ্টি উপেক্ষা করেই প্রায় জনসমুদ্রে পরিণত হয় গোটা স্টেডিয়াম।
এমন আনন্দঘন মুহূর্তে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটারদের ছুঁয়ে দেখতে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় সমর্থকদের জন্য। তার আগে স্টেডিয়ামে যাওয়ার পথে ছাদখোলা বাসের মাথায় ট্রফি নিয়ে উল্লাস করছেন রোহিত-কোহলি-হার্দিক-পান্ত ও সূর্যকুমাররা। রোহিতদের দেখতে রাস্তার ধারে গাছের ওপরেও উঠে পড়েছেন সমর্থকদের কেউ কেউ।
বাস থেকে উল্লসিত জনতার ছবি তুলছেন রোহিত। একই সময়ে ট্রফি নিয়ে উল্লাস করতে দেখা যায় হার্দিক ও সিরাজদের। প্রত্যেকে এক বার করে ট্রফি নিয়ে জনতার সামনে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। মানুষের ভিড় দেখে উল্লসিত ক্রিকেটাররাও, তারই ফাঁকে ফাঁকে দিয়েছেন অভিবাদনের জবাব।
ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে পৌঁছে গানের তালে নাঁচে মেতে ওঠেন রোহিত, বিরাট ও হার্দিকরা। মাঠের মাঝে তৈরি করা হয় মঞ্চ। তারই সামনে চেয়ারে বসার ব্যবস্থা ক্রিকেটারদের জন্য। রয়েছেন বিসিসিআইয়ের কর্মকর্তারাও। শুরুতে ট্রফি রেখে জাতীয় সঙ্গীত গান তারা, তাতে দর্শকরা গলা মেলান।
ওয়াংখেড়েতে পৌঁছে রোহিত জানান, এই জয় শুধু ক্রিকেটারদের জয় নয়, এই জয় দেশবাসীর জয়। এর আগে চ্যাম্পিয়ন দলের জন্য ১২৫ কোটি রুপি পুরস্কার ঘোষণা করেছিল বিসিসিআই। ওয়াংখেড়েতে জনসমুদ্রের সামনে ভারতীয় দলের হাতে সেই চেক তুলে দেন জয় শাহ ও রজার বিন্নী।