ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মেনে নিলে পদত্যাগ করার হুমকি দিয়েছেন দেশটির দুই কট্টর ডানপন্থী মন্ত্রী। রোববার (২ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ এবং জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির বলেছেন, তারা হামাসকে ধ্বংস করার আগে যেকোনো চুক্তির বিরোধী।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, হামাসের সামরিক এবং শাসন করার ক্ষমতা ধ্বংস না হওয়া বং সমস্ত জিম্মিকে মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত কোনো স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হবে না।
প্রায় ৮ মাস ধরে চলা গাজা যুদ্ধের অবসানে শুক্রবার (৩১ মে) একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ওই প্রস্তাবকে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দাবি করে বাইডেন বলেন, গাজায় পূর্ণ যুদ্ধবিরতির ক্ষেত্রে ইসরায়েল একটি নতুন রোডম্যাপ দিয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ইসরায়েলের তিন-ধাপের প্রস্তাবটি ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি কার্যকরের মধ্যদিয়ে শুরু হবে। এই সময়ে গাজার সমস্ত জনবহুল এলাকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার করা হবে। শতশত ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেয়া হবে।
বাইডেনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হামাস বলেছে, তারা এই প্রস্তাবকে ‘ইতিবাচক’ হিসেবে দেখছে। ইসরায়েলের বিরোধী দলগুলোও এতে সমর্থন জানিয়েছে। হামাসের হাতে জিম্মি ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরাও এই প্রস্তাব কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছেন।
তবে ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতানিয়াহুকে উদ্দেশ্য করে লেখেন, প্রস্তাবিত পরিকল্পনায় সম্মত হয়ে হামাসকে ধ্বংস না করে ও সমস্ত জিম্মিকে ফিরিয়ে না এনে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটানো কোনো সরকারের অংশ হবেন না।
একই সুরে কথা বলেছেন বেন-গভিরও। তিনিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, চুক্তি.. মানে যুদ্ধের সমাপ্তি এবং হামাসকে ধ্বংস করার লক্ষ্য বাদ দেওয়া। এটি একটি বেপরোয়া চুক্তি, যা সন্ত্রাসবাদের বিজয় এবং ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্য নিরাপত্তা হুমকির সৃষ্টি করে। ইসরায়েলের এই মন্ত্রী সরকার ভেঙে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন।
এদিকে মিশর, কাতার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক যৌথ বিবৃতিতে ইসরায়েল এবং হামাসকে বাইডেনের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির চুক্তিকে মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।