নগদ সহায়তা প্রত্যাহারের নির্দেশনা কার্যকর করার সময় এক মাস পিছিয়ে সংশোধনী প্রকাশ করলো বাংলাদেশ ব্যাংক। তাছাড়া অস্ট্রেলিয়া,জাপান ও ভারতের বাজারকে আবারও নতুন বাজার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে এ সম্পর্কিত সংশোধনী জারি করে সকল ডিলার ব্যাংকের পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করে পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা কমানোর ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। যেখানে অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারত প্রচলিত বাজারের আওতাভুক্ত করে প্রণোদনা নামিয়ে আনা হয়েছিল দশমিক ৫০ শতাংশে। আর কার্যকর কাল উল্লেখ করা হয়েছিল ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত । আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে সেই আদেশ পেছানো হলো।
সংশোধনীতে বলা হয়েছে, এটি ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
এছাড়া, ৩০ জানুয়ারির প্রজ্ঞাপনে ৫ এইচএস কোডের পোশাক রপ্তানিতে আর নগদ সহায়তা দেওয়া হবে না। এসব পণ্যের মধ্যে আছে, পুরুষ ও বাচ্চা ছেলেদের জন্য নিট বা ক্রশেট শার্ট, টি শার্ট, ভেস্ট, জার্সি, পুলওভার, কার্ডিগান, জ্যাকেট, ব্লেজার, ট্রাউজার, স্যুট ও সমজাতীয় পণ্য। পণ্যগুলোর এইচএস কোডগুলো হলো– ৬১০৫, ৬১০৭, ৬১০৯, ৬১১০ ও ৬২০৩।
২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে উন্নিত হওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। সে লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে সব ধরনের রপ্তানি পণ্যে প্রণোদনা হ্রাস করার একটি কৌশলগত পরিকল্পনা ৩০ জানুয়ারিতে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঘোষণা করা হয়। এরপর তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির দুই সংগঠন ও বস্ত্র খাত থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। যার ফলশ্রুতিতে এ সংশোধনী এলো।
স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে এত দিন বাংলাদেশ মোট ৪৩ খাতে নগদ সহায়তা দিয়ে আসছিল। টাকার অংকের এর পরিমাণ প্রায় ৬৫ হাজার কোটি টাকা। এর প্রায় ৬৫ শতাংশই পাচ্ছে বস্ত্র খাত। বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান ও বৈদেশিক মুদ্রার বড় বাহক হিসেবে এই খাত এই সহায়তা পেয়ে আসছিল।
ত্রিশ বছর ধরে তৈরি পোশাক শিল্প খাত এ সহযোগিতা পেয়ে আসছে। তৈরি পোশাক শিল্প খাত মহীরুহে পরিণত হলেও প্রণোদনা পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা করা হয়।
শেষে দেশ স্বল্পোন্নত থেকে উত্তরণের প্রাক্কালে বেশ কিছু খাতে প্রণোদনা অংশিকভাবে প্রত্যাহারে প্রজ্ঞাপন জারি করে। কিন্তু উদ্যোক্তাদের প্রবল চাপে সময় এই আদেশ কার্যকরে এক মাস সময় বৃদ্ধির পাশাপাশি বেশ কিছু রপ্তানি পণ্যে আবারও ফিরলো প্রণোদনা।