পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দেশের দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীতে ইপিজেডটি গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ র প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় গত ২৯ আগস্ট পটুয়াখালী ইপিজেড প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে বরিশালে এখনো গ্যাস–সংযোগ না থাকায় এই ইপিজেডে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ পাওয়া যাবে কি না, সেটি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
সম্পূর্ণ দেশীয় অর্থায়নে নির্মাণ করা হবে পটুয়াখালী ইপিজেড। এটির উন্নয়নে ১ হাজার ৪৪২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ১০৫ কোটি টাকা দেবে সরকার, যার মধ্যে ৪০ শতাংশ মূলধনি (ইকুইটি) বিনিয়োগ। আর বাকি প্রায় ৩৩৮ কোটি টাকা বেপজা তার নিজস্ব তহবিল থেকে দেবে।
প্রকল্প প্রস্তাব অনুযায়ী, নতুন এ ইপিজেডে ৩০৬টি শিল্প প্লট থাকবে। এতে চারটি ৬ তলা কারখানা ভবন; তিনটি ১০ তলা ও চারটি ৬ তলা আবাসিক ভবন এবং একটি ৬ তলা ও দুটি ৪ তলা অফিস ভবন নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া থাকবে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র, হেলিপ্যাড–সুবিধা, কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার (সিইটিপি), সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি), বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জলাধার প্রভৃতি। এ ছাড়া কুয়াকাটায় প্রায় সোয়া দুই একর জমির ওপর তৈরি করা হবে একটি ইনভেস্টরস ক্লাব।
আয়তনে পটুয়াখালী ইপিজেড দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইপিজেড। গত জুলাইয়ে এ প্রকল্পের মেয়াদ শুরু হয়। কাজ শেষ হবে ২০২৬ সালের জুন।
পদ্মা সেতুসহ কয়েকটি নতুন সেতু চালুর কারণে রাজধানীর সঙ্গে পটুয়াখালীর সরাসরি সড়ক যোগাযোগ তৈরি হয়েছে। আবার পটুয়াখালীতে গড়ে তোলা হয়েছে পায়রা সমুদ্রবন্দর। ভবিষ্যতে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত রেল যোগাযোগ স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া পটুয়াখালী থেকে মোংলা সমুদ্রবন্দরের দূরত্ব ২৫০ কিলোমিটার।
পায়রাতে ইতিমধ্যে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছে। পটুয়াখালীর কাছাকাছি এলাকা বাগেরহাটের রামপালেও তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছে। এসব বিবেচনায় পটুয়াখালীতে ইপিজেড স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান বেপজার কর্মকর্তারা।
বেপজা কর্মকর্তারা আরও জানান, পটুয়াখালী ইপিজেডে হালকা প্রকৌশল, আসবাব, খাদ্য ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিকস এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শিল্প স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। এটি চালু হলে প্রত্যক্ষভাবে প্রায় এক লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে।
২০১৯ সালের নভেম্বরে বেপজার গভর্নিং বোর্ডের সভায় এই ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। জেলা সদরের আউলিয়াপুর ইউনিয়নে ৪১৮ একর জায়গায় এ ইপিজেড গড়ে তোলা হচ্ছে।