ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আহম্মদ মুঈদ জানিয়েছেন, মুভি দেখে মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচাতে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে রূপালী ব্যাংকের জিঞ্জিরা শাখায় ডাকাতি করতে যান তিন তরুণ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি। তিন ডাকাতের মধ্যে দুজনের বয়স ১৬ এবং একজনের ২২।
আটকদের বরাত দিয়ে এসপি বলেন, মুমূর্ষু একজন রোগীকে (কিডনি সমস্যায় অসুস্থ) বাঁচাতে ব্যাংকে ডাকাতি করতে আসেন ৩ তরুণ। ডাকাতরা মুভি দেখে এমন একটি অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে ডাকাতি করতে আসেন বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে। তবে তারা যে রোগীর ঠিকানা দিয়েছেন সেটি যাচাই-বাছাই চলছে। আদৌ সত্য কি না তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
আহম্মদ মুঈদ জানান, তাদের অপরাধী বলা যায় না। তারা হয়তো মিস গাউডেড। ঘটনার শুরু থেকেই আইজিপি স্যার লাইভে এসে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি আমাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন কোনো হতাহতের ঘটনা ছাড়া যেন অভিযান শেষ হয়। এ জন্য ডাকাতদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ ধরে কথা বলেছি। ডাকাতদের আইজিপি স্যারের সঙ্গেও কথা বলিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
এসপি আহম্মদ মুঈদ বলেন, তাদের তিনজন ছাড়া বাইরে কেউ ছিল না। তবে তারা প্রাথমিকভাবে আমাদের বলেছিলেন বাইরে তাদের লোক আছে। তারা পুলিশকে ভয় দেখানোর জন্য বলেছিলেন তাদের আরও লোক আছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে খেলনা অস্ত্র নিয়ে ডাকাতরা ব্যাংকে ঢোকে। এ সময় পাশের মসজিদের মাইক থেকে ডাকাতির বিষয়ে জানানো হলে আশপাশের কয়েকশ লোক ব্যাংকের ওই শাখাটি ঘেরাও করেন। এরপর পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র্যাব এসে উপস্থিত হয়। এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে যৌথবাহিনীর ডাকে সাড়া দিয়ে আত্মসমর্পণ করে ডাকাতরা।
কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাব আল হাসান জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের কাছ থেকে চারটি খেলনা পিস্তল ও দুটি চাকু উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি বলেন, রূপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখা থেকে যৌথ বাহিনীর হাতে আত্মসমর্পণ করা তিন ডাকাত থানা হেফাজতে আছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনজন তাদের নাম সাফায়েত, নীরব ও সিফাত বলেছে। নামগুলো সঠিক কি না যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ডাকাতরা হানা দেওয়ার সময় ব্যাংকে মোট ছয়জন গ্রাহক ছিলেন। তারা নিরাপদে আছেন। সেসময় ব্যাংকের ছিলেন সাতজন কর্মকর্তা, একজন অফিস সহকারী ও দুজন ফায়ার গার্ড। সবাই সুস্থ আছেন। ব্যাংকের সব টাকা গুনে দেখা হয়েছে, এক টাকাও খোয়া যায়নি।