দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে হেরে ১-০তে এগিয়ে যায় স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাই সিরিজে ফিরতে বাংলাদেশের সামনে দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের বিকল্প ছিল না। আন্টিগাতে প্রথম ম্যাচে না পরলেও জ্যামাইকা টেস্টে তাইজুল ইসলামের ঘূর্ণিতে ক্যারিবিয়ানদের ১১০ রানে হারিয়েছে টাইগাররা। সেই সঙ্গে জয় দিয়েই ২০২৪ সালের টেস্ট অভিযান শেষ করল বাংলাদেশ।
কিংস্টনের এ জয়ের বড় মাহাত্ম দীর্ঘ অপেক্ষার অবসানে। ২০০৯ সালের গ্রেনাডা টেস্টের ১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদেরই মাটিতে হারাল বাংলাদেশ। এ ছাড়া দেশ-বিদেশ মিলিয়েই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতল ছয় বছর পর।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) কিংস্টনের স্যাবিনা পার্কে ম্যাচের চতুর্থ দিনের শেষ সেশনে জয়ের স্বাদ পায় সফরকারীরা।
ক্যারিবিয়ানদের মাটিতে অতীতে দুটি টেস্ট জেতার সুখস্মৃতি ছিল বাংলাদেশের। ২০০৯ সালের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করেছিল তারা। তবে ১৫ বছর আগের সেই দল ছিল প্রথম সারির তারকাদের ছাড়া সাজানো। এবার পূর্ণশক্তির উইন্ডিজের বিপক্ষে জিতে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটানোর পাশাপাশি ১-১ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ ড্র করেছে সফরকারীরা।
দ্বিতীয় ইনিংসে টানা নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৫০ রান খরচায় ৫ উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম। টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৫তম বারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেটের স্বাদ পান তিনি। সবমিলিয়ে এই টেস্টে ৭৪ রান খরচায় তার শিকার ৬ উইকেট।
উইকেট নেয়ার পাশাপাশি তাইজুল খেলেন ১৬ ও ১৪ রানের দুটি দারুণ লড়াকু ইনিংস। ব্যাটে বলে চমৎকার পারফরম্যান্সের জন্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেন তিনি।
টেস্টে এ নিয়ে তৃতীয়বার ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতলেন তাইজুল। আর দেশের বাইরে প্রথমবার। ২০১৪ সালে প্রথমবার জিতেছিলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুর টেস্ট। এরপর গত বছর নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেট টেস্টে পান আবার।
সিরিজ সেরার পুরস্কার জেডেন সিলসের সঙ্গে ভাগাভাগি করেন তাসকিন আহমেদ। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে প্রথম জয়ের স্বাদ নেন বাংলাদেশের মেহেদী হাসান মিরাজ।
কিংস্টন টেস্ট জয়ের মাধ্যমে ২০০৯ সালের সাফল্যকে ছাড়িয়ে যায় বাংলাদেশ। সেবার ওয়েস্ট ইন্ডিজেই দুটি টেস্ট জিতেছিল তারা। এতদিন কোনো পঞ্জিকাবর্ষে এটাই ছিল সেরা সাফল্য। এবার জয় পায় তিনটি। পাকিস্তানকে তাদেরই মাটিতে দুই ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। সবমিলিয়ে এই বছর দেশের জয় হল তিনটি।
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের কোনো আসরে এটাই বাংলাদেশের সেরা সাফল্য। এবার জিতল তিন ম্যাচ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ১৬৪ ও ২৬৮ (জাকের ৯১, সাদমান ৪৬, মিরাজ ৪২, শাহাদাত ২৮; রোচ ৩/৩৬, আলজারি ৩/৭৭)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৪৬ ও ১৮৫ (হজ ৫৫, ব্রাফেট ৪৩; তাইজুল ৫/৫০, হাসান ২/২০, তাসকিন ২/৪৫)।
ফল: বাংলাদেশ ১০১ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: তাইজুল ইসলাম।
সিরিজ: দুই ম্যাচ সিরিজ ১-১ সমতা।
প্লেয়ার্স অব দ্য সিরিজ: তাসকিন আহমেদ ও জেডন সিলস।