কলকাতার কেন্দ্রীয় ব্যবসায়িক এলাকা, যা ‘মিনি বাংলাদেশ’ নামেও পরিচিত। বাংলাদেশি পর্যটকদের অভাবে বড় ধরনের লোকসান গুনছে এখানকার বিভিন্ন হোটেল ও খুচরা দোকানের ব্যবসায়ীরা। তাদের অনেকে বলছেন, করোনা মহামারির পর এমন দশায় আর কখনো পড়তে হয়নি তাদের। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।
চলতি বছরের জুলাই মাসের পর থেকে ভারতীয় ভিসা নীতির কঠোরতা এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব কলকাতার মিনি বাংলাদেশ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে মারাত্মক সংকট সৃষ্টি করেছে। এর ফলে, ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন এবং প্রায় ৭০ শতাংশের বেশি ব্যবসা কমে গেছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতার মারকুইস স্ট্রিট, সাডার স্ট্রিট, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট, রফি আহমেদ কিদওয়াই রোড এবং এলিয়ট রোডে অবস্থিত ১২০টি হোটেলের মাত্র ১০-১৫ শতাংশ কক্ষে অতিথি রয়েছেন। গত বছর এই সময়ে এসব হোটেলের ৮০ শতাংশ কক্ষ পূর্ণ থাকত।
কলকাতা হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সদস্য মনোতোষ সরকার জানান, গত বছর যেখানে ২৬-২৮টি কক্ষ বাংলাদেশি অতিথিদের জন্য ছিল, সেখানে এখন মাত্র ৪-৫টি।
এদিকে নিউ মার্কেটের দোকানদাররা আরও চিন্তিত, কারণ বাংলাদেশি ক্রেতাদের অভাবে তাদের বিক্রির পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। নিউ মার্কেটের চকোনাট নামক দোকানের মালিক মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, আগে যেখানে আমাদের বিক্রি ছিল সাড়ে ৩ লাখ রুপি, তা এখন কমে ৩৫ হাজার রুপি হয়ে গেছে।
এ ছাড়াও, ১২৪ বছরের পুরোনো প্রসাধনীর দোকান রয়্যাল স্টোরের মালিক অজয় শাহা জানান, আগে ২৫-৩০ জন বাংলাদেশি ক্রেতা প্রতিদিন আমাদের দোকান থেকে পণ্য কিনতেন, কিন্তু এখন সেই সংখ্যা কমে মাত্র পাঁচজনে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসা কার্যক্রমে বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটে। সীমিত পরিসরে এই কার্যক্রম আবার শুরু হলেও, ভারত সরকার জানিয়েছে, তারা শুধু চিকিৎসা ও জরুরি প্রয়োজনে ভিসা ইস্যু করবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশিদের কলকাতায় ভ্রমণ ব্যাপকভাবে কমে গেছে এবং এর ফলস্বরূপ মিনি বাংলাদেশ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে এক ধাক্কা লেগেছে।