রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ কথা জানান।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা বলতে পারি, এ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ বা অন্য কোনো বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হলে আপনারা জানতে পারবেন।
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার সাত দিনের আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে এবং সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাও ছিলেন। এ প্রসঙ্গে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যারা এই আল্টিমেটাম দিচ্ছেন, তাদেরকে এ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবেন।’
মঙ্গলবার রাতে ড. ইউনূসের অসুস্থতা নিয়ে ছড়িয়ে পড়া গুজবের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, আমরা প্রচুর কল পেয়েছি, প্রফেসর ইউনূসের স্বাস্থ্য নিয়ে অনেকে ইনকোয়ারি করেছেন। আমরা জানাতে চাই, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ এবং ভালো আছেন। প্রতিদিনই তিনি মিটিং করেন, তার ছবি দিচ্ছি আমরা। কালও অনেকগুলো মিটিং করেছেন। আজও তিনি বিএনপির সঙ্গে মিটিংয়ে ছিলেন।
এর আগে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক হয়েছে। এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর চলমান সংলাপের একটি অংশ হিসেবে বিএনপির প্রতিনিধি দল আজ এসেছিলেন। আমরা মনে করি রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের অংশীজন। তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে, সামনেও আরও হবে।’
শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন কি না, সে প্রশ্নে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের দেয়া এক বক্তব্য ঘিরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সম্প্রতি। এ অবস্থায় রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল থেকে বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান নেন কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এছাড়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ হয় এদিন। এ অবস্থায় প্রধান বিচারপতির সৈয়দ রেফাত আহমেদের সাথে বৈঠক করেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম। তারা ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন র্যাব ডিজি এ কে এম শহিদুর রহমান ও ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান।
বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় পুলিশের। এতে আন্দোলনকারীদের কয়েকজন আহত হন। পরে এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবারের মধ্যে রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ করবেন বলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের কাছ থেকে ঘোষণা আসার পরই বঙ্গভবনের সামনে থেকে সরতে শুরু করেন বিক্ষুব্ধরা।