প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। আজ ইসলাম ধর্ম সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত হবে, এটা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য না। সন্ত্রাসী সব ধর্মের নামে আছে। সন্ত্রাসী, সন্ত্রাসীই। তাদের কোনো ধর্ম নাই, তাদের কোনো দেশ নাই। এ সন্ত্রাসটাই হচ্ছে তাদের ধর্ম।
রবিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে জাতীয় হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতার পুরস্কার ও সম্মাননা ক্রেস্ট বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সারা বিশ্বে হাতে গোনা কিছু লোকের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডে শান্তির ধর্ম ইসলামের বদনাম হচ্ছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। আজ ইসলাম ধর্ম সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত হবে, এটা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য না।
তিনি বলেন, সব থেকে দুঃখজনক হলো, মুষ্টিমেয় কিছু লোক আমাদের এ ধর্মকে ব্যবহার করে জঙ্গিবাদী-সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়। জানি না, তাদের কারা এ শিক্ষা দেয় যে মানুষ হত্যা করলে বেহেশতে যাওয়া যাবে। কুরআন শরীফে তো কোথাও এই কথা লেখা নাই বা নবী করিম (সা.) ও এটা বলেননি। বিদায় হজের ভাষণে তিনি তো বলে গেছেন, সকল ধর্মের প্রতি সহনশীলতা দেখাতে। এটাই তো ইসলামের মর্মবাণী।
কোমলমতি শিশু-কিশোরদের সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ থেকে দূরে রাখতে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সুইসাইড করে মানুষ হত্যা করে কোন বেহেশতে যাচ্ছে তারা? এ বিপথ থেকে তাদের সরাতে হবে। এ জায়গা থেকে তাদের সরাতে হবে, এটা যে একটা ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ইসলাম ধর্মের নামে বদনাম দেওয়া হয়। এ বদনামের হাত থেকে ইসলামকে রক্ষা করতে হবে।
ধর্মের নামে সন্ত্রাসের তীব্র নিন্দা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাসী সব ধর্মের নামে আছে। সন্ত্রাসী, সন্ত্রাসীই। তাদের কোনো ধর্ম নাই, তাদের কোনো দেশ নাই। এ সন্ত্রাসটাই হচ্ছে তাদের ধর্ম।
তিনি বলেন, ইসলামের প্রসারে আওয়ামী লীগ সবসময় কাজ করে। ইসলামের বাণী ছড়িয়ে দিতে সারা দেশে মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে বায়তুল মোকাররমের উন্নয়ন প্রকল্প ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে মসজিদ নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেয়।
এতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর মাত্র সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধু ইসলামের উন্নয়নে ব্যাপক পদক্ষেপ নেন। তাঁর নেতৃত্বে মুসলিম বিশ্বসহ আরব দেশগুলোর সাথে সুসম্পর্ক স্থাপিত হয়। বঙ্গবন্ধুই প্রথম আইন করে মদ নিষিদ্ধ করেন; ঘোড়দৌড় ও জুয়া বন্ধ করেন।
ইসলামের প্রসারে তার সরকারের নেয়া নানা উদ্যোগের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আরবি, বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় পবিত্র কুরআনের ডিজিটাল ভার্সন তৈরি করা হয়েছে। কওমী মাদ্রাসার ডিগ্রীর সরকারী স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। শান্তির ধর্ম ইসলামের মর্মবাণী সবার কাছে পৌঁছে দিতে দেশজুড়ে মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে।
ইসলামের বদনামকারীদের প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। এখানে সন্ত্রাসের কোন স্থান নেই। বিশ্বের সব মুসলিম দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আশা করেন মুসলিম উম্মাহ এক হয়ে কাজ করবে।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এতে জাতীয় পর্যায়ের বিজয়ী শ্রেষ্ঠ ৫ জন হাফেজের হাতে সনদ ও পুরস্কারের চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ দ্বীনি সেবা ফাউন্ডেশন এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।