ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে খুন করার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে করা মামলায় মোস্তাফিজুর রহমান দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিন আসামি মোস্তাফিজকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় সেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান তার জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন।
এর আগে, গত ২৭ জুন আসামি মোস্তাফিজ ও ফয়সাল আলী শাজীর ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। আসামি ফয়সাল আলী শাজী বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছেন।
গত ২৬ জুন খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে মোস্তাফিজুর ও ফয়সালকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে ডিবির একাধিক টিম। তবে আনারকে হত্যার মিশনে অংশ নেয়া সাতজনকে গ্রেপ্তারের দাবি করলেও, এখনও সুনির্দিষ্ট কারণ জানতে পারেনি ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ব্যবসায়িক ও রাজনৈতিকসহ অন্যান্য কারণ আমলে নিয়েই চলছে তদন্ত। প্রসঙ্গত: ১২ মে চিকিৎসার জন্য ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে ভারতে যান এমপি আনার। ওঠেন পশ্চিমবঙ্গের বরাহনগর থানার মণ্ডলপাড়া লেনে গোপাল বিশ্বাস নামে এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন চিকিৎসক দেখানোর কথা বলে ওই বাড়ি থেকে বের হন তিনি। এরপর থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি।
পাঁচ দিন পর ১৮ মে বরাহনগর থানায় এমপি আনার নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করেন বন্ধু গোপাল বিশ্বাস। এরপর আর খোঁজ মেলেনি তিন বারের এ সংসদ সদস্যের। ২২ মে হঠাৎ খবর ছড়িয়ে পড়ে, কলকাতার পাশেই নিউটাউন এলাকায় সাঞ্জীভা গার্ডেনস নামে একটি বহুতল আবাসিক ভবনের বিইউ ৫৬ নম্বর রুমে আনোয়ারুল আজিম খুন হয়েছেন। ঘরের ভেতর পাওয়া যায় রক্তের ছাপ। তবে ঘরে মেলেনি তার মরদেহ।
পুলিশের তথ্যমতে, সংসদ সদস্য আনার কলকাতা যান ১২ মে। সেখানে বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাসায় ওঠেন। পরদিন তাকে প্রলুব্ধ করে নিউটাউনের ওই ফ্ল্যাটে নেয়া হয়। তখন ওই ফ্ল্যাটে উপস্থিত ছিলেন শিলাস্তি, শিমুল, তানভীর, জিহাদ হাওলাদার, সিয়াম হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়সাল আলী। পরে ২২ মে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় এমপি আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ মামলা দায়ের করেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।