বাংলাদেশের সংগীতাকাশে এক কিংবদন্তি তারকার নাম আইয়ুব বাচ্চু। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সেরা গিটারিস্ট বলা হয় এই রকস্টারকে। ২০১৮ সালে আকস্মিকভাবে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই সংগীতশিল্পী। গত বছর আইয়ুব বাচ্চুর অপ্রকাশিত গান প্রকাশ ও তাকে ট্রিবিউট করে কনসার্টসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়ে এশিয়াটিকের সঙ্গে চুক্তি হয় আইয়ুব বাচ্চু ফাউন্ডেশনের। সেই চুক্তি অনুযায়ী আসন্ন রোজার ঈদে প্রকাশ পেতে যাচ্ছে আইয়ুব বাচ্চুর অপ্রকাশিত গান ‘ইনবক্সে’।
‘ইনবক্সে ঝিমায় বসে, বোকা শব্দের দল/ ফেসবুকে লুটোপুটি খায়/ সস্তা চোখের জল’ এমন সমসাময়িক থিম নিয়ে তৈরি গানের কথায় সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশের রক আইকন আইয়ুব বাচ্চু। গানটির থিম অনুযায়ী ভিডিও নির্মাণ করছে কোলাহল কমিউনিকেশন।
গানটি প্রসঙ্গে গীতিকবি নিয়াজ আহমেদ অংশু বলেন, আমাদের কাছে বাচ্চু ভাইয়ের একাধিক গান অপ্রকাশিত রয়েছে। আইয়ুব বাচ্চুর ব্যান্ড ‘এলআরবি’র গিটারিস্ট মাসুদ গানগুলো খুব যত্নে রেখেছেন। এবং সেখান থেকেই গানগুলো ধারাবাহিকভাবে মুক্তি দেয়া হবে।
‘এলআরবি’র গিটারিস্ট আব্দুল্লাহ মাসুদ বলেন, বসের (আইয়ুব বাচ্চু) একাধিক গান রয়েছে এবি কিচেনের হার্ডডিস্কে, যার রেকর্ড ধারণ থেকে শুরু করে রক্ষণাবেক্ষণ আমিই করতাম। বস একটি অ্যালবাম করলে অনেকগুলো গান রেকর্ড করতেন। এরপর সেখান থেকে বাছাই করে অ্যালবামে প্রকাশ করতেন। বাকি গানগুলো রয়ে যেতো। সেই অপ্রকাশিত গানগুলো নিয়েই কাজ করছে এবি ফাউন্ডেশন।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৮ সালে আইয়ুব বাচ্চু যোগ দেন ‘ফিলিংস’ ব্যান্ডে। এরপর ১৯৮০ সালে ‘সোলস’-এ। এই রক লিজেন্ডের হাত দিয়েই ফুটেছিল ‘নদী এসে পথ’ গানের সেই বিখ্যাত গিটার সলোর ফুল। রক গান নিয়েই ছিল বাচ্চুর চিন্তা, ভাবনা, ভালোবাসা।
১৯৮২ সালে নকীব খান ও পিলু খান সোলস থেকে বেরিয়ে ‘রেনেসাঁ’ গঠন করেন। ব্যান্ডের মূল কম্পোজার তখন হয়ে গেলেন বাচ্চুই। ১৯৮৪-তে তপন চৌধুরীর প্রথম সলো অ্যালবাম ‘তপন চৌধুরী’র সব গানের সুর-সংগীত করেন এই গিটার জাদুকর। ‘আলো ভেবে যারে আমি’ কিংবা ‘আমি অনেক ব্যথার শ্রাবণ পেরিয়ে’র মতো মেলোডিয়াস সেমি ক্লাসিক্যাল গান বের হয়ে আসে সেখান থেকে।
১৯৯০ সালে সোলস ছাড়েন বাচ্চু এবং ১৯৯১-এ ‘এলআরবি’ গড়ে তোলেন। ১৯৯২-এ তাদের প্রথম অ্যালবাম বাজারে আসে। এখান থেকেই মূলত হার্ডরক শুরু করেন আইয়ুব বাচ্চু।