Google search engine
প্রচ্ছদচট্টগ্রামরাউজানে কলেজছাত্র হৃদয়কে জবাইকারী ও সহযোগীকে কর্ণফুলী থেকে গ্রেফতার

রাউজানে কলেজছাত্র হৃদয়কে জবাইকারী ও সহযোগীকে কর্ণফুলী থেকে গ্রেফতার

চট্টগ্রামের রাউজানে মুরগির খামার থেকে অপগরণের পর গহিন পাহাড়ে কলেজছাত্র শিবলী সাদিক (১৯) হৃদয়কে জবাইকারী উচিংথোয়াই মারমা (২৩) ও তার সহযোগী ক্যাসাই অং মারমা (৩৬) কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭।

০১ অক্টোবর, রবিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম এসব তথ্য জানান। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী থানাধীন নতুনব্রিজ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম জানান, রাউজানে কলেজছাত্র খুনের ঘটনায় জড়িত দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে জবাইকারীও রয়েছে।

ভুক্তভোগী শিবলী সাদিক রাউজানের কদলপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি এলাকার একটি মুরগির খামার দেখাশোনা করতেন। সেই খামারে কাজ করা কয়েকজনের মধ্যে বিরোধকে কেন্দ্র করে গত ২৮ আগস্ট শিবলী সাদিককে সাত-আটজন যুবক সিবলীকে অপহরণ করে গহিন পাহাড়ে নিয়ে যান।

পরদিন হত্যা করে লাশ টুকরা করে পাহাড়ে ছড়িয়ে রাখেন। পরে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ চান। এরপর সিবলীর স্বজনেরা মুক্তিপণ দিতে রাজি হলে বান্দরবান চলে যান অং ফ্রাই সিং। সিবলীর বাবা ২ সেপ্টেম্বর দুজনকে সঙ্গে নিয়ে বান্দরবান জেলা সদরের একটি গহিন পাহাড়ে অং ফ্রাই সিংয়ের হাতে মুক্তিপণের দুই লাখ টাকা দিয়ে আসেন। কিন্তু তারা শিবলীকে মুক্তি দেয়নি। এরপর ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে রাউজান থানায় মামলা দায়ের করেন।

মামলার পর ১০ সেপ্টেম্বর চান্দগাঁও থানা এলাকা থেকে শিবলীকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সুইচিংমং মারমা (২৪), অংথুইমং মারমা (২৫) ও উমংচিং মারমাকে (২৬) গ্রেফতার করে পুলিশ। অং ফ্রাই সিং আদালতে বলেছেন, সিবলী সাদিককে হত্যার পর পাহাড়ে লাশের দেহাবশেষ গুম করেন তাঁরা। এরপর ছেলেকে ফিরিয়ে দেওয়ার নামে তাঁর স্বজনদের ফোন করে ডেকে নিয়ে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণও আদায় করেন।

দুই আসামি রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার বড়ইছড়ির সুইচিংমং মারমা (২৪) ও রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার অংথুইমং মারমা (২৫) জবানবন্দিতে আদালতে জানিয়েছিলেন, মাসখানেক আগে খামারের কাজ নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সিবলীর সঙ্গে পাঁচ-সাতজন শ্রমিকের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এর পর থেকে সিবলীর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন ওই শ্রমিকেরা। তবে এ ঝগড়ার মীমাংসা করে দিয়েছিলেন খামারের মালিকেরা। কিন্তু ভেতরে-ভেতরে এর ক্ষোভ রয়ে গিয়েছিল শ্রমিকদের মধ্যে। তারা পরিকল্পনা করতে থাকেন, সিবলীকে শায়েস্তা করবেন। এই ক্ষোভ থেকে তারা সিবলীকে হত্যা করেন।

আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে গ্রেফতার অং ফ্রাই সিং মারমা বলেন, গত ২৮ আগস্ট তিনিসহ সাত-আটজন যুবক সিবলীকে অপহরণ করে গহিন পাহাড়ে নিয়ে যান। পরদিন হত্যা করে লাশ টুকরা করে পাহাড়ে ছড়িয়ে রাখেন। পরে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ চান। এরপর সিবলীর স্বজনেরা মুক্তিপণ দিতে রাজি হলে বান্দরবান চলে যান অং ফ্রাই সিং। সিবলীর বাবা ২ সেপ্টেম্বর দুজনকে সঙ্গে নিয়ে বান্দরবান জেলা সদরের একটি গহিন পাহাড়ে অং ফ্রাই সিংয়ের হাতে মুক্তিপণের দুই লাখ টাকা দিয়ে আসেন।

আসামি অং ফ্রাই সিং মারমার জবানবন্দি থেকে জানা যায়, এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন মামলার প্রধান আসামি উমংসিং মারমা (২৬)। তাকে গ্রেফতারের পর পুলিশ পাহাড় থেকে সিবলীর লাশের দেহাবশেষ নিয়ে ফেরার পথে বিক্ষুব্ধ জনতা উমংসিংকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন।

নির্মম হত্যাকাণ্ডের স্বীকার সিবলী সাদিক রাউজান উপজেলার কদলপুর ইউনিয়নের পঞ্চপাড়া গ্রামের মুহাম্মদ শফির ছেলে। তিনি স্থানীয় কদলপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার পাশাপাশি মুরগির খামারে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে চাকরি করতেন। পিকআপ ভ্যানের চালক শফির দুই ছেলের মধ্যে তিনি বড় ছিলেন।

spot_img
spot_img

এই বিভাগের আরও পড়ুন

চট্টগ্রাম

সারাদেশ

বিশেষ-সংবাদ

বিনোদন